শুক্রবারই ভার্চুয়াল বৈঠক থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীকে দলনেত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, দল বিরোধী কাজে যুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। মমতা নাম না করলেও ইঙ্গিত ছিল শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর অনুগামীদের দিকে। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাঁর বাবা এবং সাংসদ শিশির অধিকারীকেই দায়িত্ব দিয়ে মমতা ব্যানার্জি অধিকারী বাড়ির মনোভাব বুঝে নিতে চাইছেন বলেই তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন।
কারণ, শুভেন্দুর সঙ্গে দলের বিচ্ছেদ যখন আসন্ন, তখন তাঁর বাবা শিশির অধিকারী এবং সাংসদ ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী কী করবেন তা নিয়েও কিন্তু জল্পনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের অন্দরে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তো বটেই, রাজ্যজুড়েই তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, আগামী ৭ ডিসেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুরে মমতা ব্যানার্জির সমাবেশে কি অধিকারী পরিবারের কেউ উপস্থিত থাকবেন?
সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরে জনসভা মমতা ব্যানার্জির। বাঁকুড়া থেকে প্রচার শুরু করলেও ৭ তারিখের সভার রাজনৈতিক তাৎপর্য বিশাল। সেখানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন দুই মেদিনীপুরের সমস্ত বিধায়ক ও সাংসদ। কিন্তু সভায় কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী এবং তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু উপস্থিত থাকবেন কি? এটাই এখন বড়ো প্রশ্ন। কারণ, শুভেন্দু অধিকারী যে উপস্থিত থাকবেন না, তা একপ্রকার নিশ্চিত। কিন্তু শিশির-দিব্যেন্দু কি যাবেন সেখানে?
তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, শিশির-দিব্যেন্দু খব সম্ভবত মিটিংয়ে যাবেন না। তাঁরা নিজেরা কী বলছেন? শিশির ও দিব্যেন্দু অধিকারীর এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অধিকারীদের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা যাচ্ছে, শিশিরবাবুর বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই। করোনা কালে তাঁর পক্ষে জনসভা বা প্রকাশ্য কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে। তাই তাঁর না যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আর কী কোনও কারণ আছে? তা অবশ্য জানা যায়নি।
তমলুকের তৃণমূল সাংসদ তথা শিশিরবাবুর আরেক ছেলে দিব্যেন্দু কী করবেন? তিনি যাবেন মমতার সভায়? সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, বাবার মতো দিব্যেন্দুও সম্ভবত যাচ্ছেন না পশ্চিম মেদিনীপুরে নেত্রীর জনসভায়।
এদিকে এই জল্পনা চলছে তৃণমূলের শীর্ষ স্তরেও। শুভেন্দু অধ্যায় সমাপ্ত হলে শিশির-দিব্যেন্দু কী করেন সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। তৃণমূল সূত্রে খবর, শিশিরবাবু এখনও পূর্ব মেদিনীপুরের সভাপতি। নিজে জানিয়েছেন তিনি নেত্রীর সঙ্গেই থাকবেন। সভায় আসবেন কিনা তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কোনও খবর নেই। তৃণমূল নেতৃত্বের একটি অংশ সোমবার কী হয় দেখতে চাইছেন। কারণ, মমতার মেদিনীপুরের সভায় যদি দু’জনেই না থাকেন, তাহলে শুভেন্দুর সঙ্গে সঙ্গে গোটা অধিকারী পরিবারের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠে যাবে।
Comments are closed.