সোমবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজভবনে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে। রাজ্যপালের স্ত্রীও ছিলেন দু’জনের এই বৈঠকের মাঝে। প্রায় এক ঘণ্টা চলে ওই বৈঠক। আলোচনা শেষ হওয়ার পর মমতা সোজা বেরিয়ে যান। তিনি তখন কোনও মন্তব্য করেননি। কী নিয়ে কথা হল, কিছুই জানাননি তিনি। রাজ্যপালও মুখে কিছু বলেননি। তবে বৈঠক শেষে তিনি এক ট্যুইট জানান, রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক ঘণ্টা ধরে চূড়ান্ত সন্তোষজনক আলোচনা হল।
এই বৈঠকের পরই রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে, তবে কি বরফ গলল? বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ রবিবার বলেছিলেন, এমন সৌজন্য সাক্ষাতে রাজ্যেরই লাভ। রাজ্যপালের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হলে বাংলার লাভ হবে। ধনখড় রাজভবনে বসার পর থেকেই রাজভবনের তাঁর সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত শুরু হয়ে যায়। নবান্নকে না জানিয়ে জেলায় জেলায় সরকারি অফিসারদের বৈঠক ডাকা থেকে শুরু করে হেলিকপ্টার চেয়ে না পাওয়া, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে আটকে পড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ঘেরাওমুক্ত করতে সোজা ক্যাম্পাসে চলে আসা, যাদবপুর এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিতে বা পারা, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলা ইত্যাদি বহু ইস্যুতে রাজ্যপালের সঙ্গে তৃণমূলের বিরোধ হয়। খোদ মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, রাজ্যপাল রাজভবন থেকে সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছেন। শাসকদলের অন্য অনেক মন্ত্রী, নেতা রাজ্যপালকে বিজেপির দালাল বলতেও ছাড়েননি। এই সংঘাতের আবহেই রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন। রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপাল সরকারের বেঁধে দেওয়া ভাষণই পড়বেন না, নিজের কথা বলবেন, তা নিয়েও কৌতূহল ছিল। অধিবেশন শুরুর আগের দিনই রাজ্যপাল মন্তব্য করেন, আগামী কাল ইতিহাস রচনা করবেন তিনি। তাতে জল্পনা আরও বাড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সরকারের ঠিক করা ভাষণই পাঠ করায় শাসকদল স্বস্তি পায়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে কী আলোচনা হল, তা নিয়ে কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক।
Comments are closed.