মমতা: আমিই গোটা রাজ্যে তৃণমূলের অবজার্ভার, কয়েকটা ধান্দাবাজ অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, সব জানি, ছেড়ে রেখেছি
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দিলেন মমতা ব্যানার্জি। আর এই নির্বাচনী প্রচারে প্রথম দিনই ২৫ নভেম্বর বুধবার বাঁকুড়ার জনসভায় তুলে আনলেন সেই ইস্যু, যা গত তিন মাস ধরে সবচেয়ে অস্বস্তিতে ফেলেছে দলীয় নেতৃত্বকে। তা হচ্ছে, কোন নেতা তৃণমূল ছাড়বেন, কোন নেতা অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কারও নাম উল্লেখ না করে এদিন মমতা ব্যানার্জি জানিয়ে দিলেন, বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি দলনেত্রীর ভূমিকাও পালন করবেন।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, বিভিন্ন কাজে দলকে একটু কম সময় দিচ্ছিলাম। এখন থেকে আবার বেশি করে সময় দেব দলকে। শুনতে পাচ্ছি অনেকে প্রশ্ন করছেন, জানতে চাইছেন, আলোচনা করছেন, এই জেলার কে নেতা, ওই জেলার কে অবজার্ভার, কোন জেলা কে দেখছেন! জেনে রাখুন, আমিই গোটা রাজ্যের অবজার্ভার। বাঁকুড়ার সোনামুখী থেকে শুরু করে গোটা রাজ্যে দলের কোথায় কী হচ্ছে সব আমি দেখব এখন থেকে। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস আগে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা তৃণমূলের অবজার্ভার প্রথার অবসান ঘটানো হয়। অবজার্ভার পদ তুলে দিয়ে সমস্ত জেলার সংগঠন কেন্দ্রীয়ভাবে দেখার সিদ্ধান্ত হয়। তৃণমূলের অন্দরমহলের ব্যাখ্যা, এরপর থেকেই দলের মধ্যে নানা প্রশ্ন মাথাচাড়া দেয়। যা থেকেই সূত্রপাত দলে ভাঙন নিয়ে যে চর্চা শুরু হয়েছে তার। সূত্রের খবর, যে সমস্ত শীর্ষ নেতা বিভিন্ন জেলার অবজার্ভার ছিলেন, তাঁদের অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশও করেন। কিছু কিছু জেলায় একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বও সামনে চলে আসে।
কিন্তু এতদিন এই বিষয়ে প্রকাশ্যে একটি কথাও বলেননি মমতা ব্যানার্জি। এদিন কারও নাম না করে তিনি বলেন, আমি গোটা রাজ্যের অবজার্ভার। কে কী করছে সব নজরে রাখছি। দু’একজন ধান্দাবাজ আছে অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, কথা বলছে। সব জানি। কিছু বলছি না এখন। দেখছি আরও কী কী করে। ছেড়ে রেখেছি। এরপরই দলের ছাত্র ও যুব সংগঠেনের কর্মী এবং তৃণমূলস্তরের কর্মীদের সক্রিয় হতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আপনারা নজর রাখুন নেতাদের ওপর। কোন নেতা কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, রাতের অন্ধকারে কোথায় যাচ্ছে। কার সঙ্গে কথা বলছে, সব দেখুন।
সাম্প্রতিক সময়ে বারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত থেকে কোচবিহারের মিহির গোস্বামী, এমনকী একাধিক ছোট-মাঝারি নেতার নানা কথা, অস্বস্তিতে ফেলেছে দলকে। কয়েকজন নেতার সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী প্রথম নির্বাচনী জনসভায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দলীয় সংগঠনের বিষয় অন্য কেউ নন, এবার থেকে সমস্ত সিদ্ধন্ত নেবেন তিনি নিজে।
কর্মীদের আশ্বস্ত করে তৃণমূল নেত্রীর বার্তা, এখন থেকে দল আমি দেখব। বাংলায় তৃণমূলই ক্ষমতায় আসবে জেনে রাখুন। লোকসভা ভোটের সময় বিজেপি টাকা দিয়ে অনেককে কিনে নিয়েছিল। আগে থেকে বুঝতে পারিনি। এবার আগে থেকেই সতর্ক আছি।
Comments are closed.