উদ্ধবের শপথে আমন্ত্রিত মমতা-সনিয়া-সহ তাবড় বিরোধী নেতা-নেত্রী, আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও

বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে জোট সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি-সহ একাধিক বিরোধী নেতা-নেত্রী আমন্ত্রিত। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন ছাড়াও কংগ্রেস শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। শিবসেনার নেতা একনাথ শিন্দে জানান, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, আমন্ত্রিতের তালিকায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। শিবসেনার নেতা বিনায়ক রাউত জানান, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪০০ কৃষককে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে নিয়ে আসা হচ্ছে। গত দু’ তিন বছরে যে সমস্ত কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন, তাঁদের পরিবারকেও আমন্ত্রণ করা হয়েছে।
বুধবার দিনভর শপথগ্রহণ এবং মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে নানা তৎপরতা চলে। তিন দলের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হয়। এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে, মহারাষ্ট্রের কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি বালাসাহেব থোরাট এবং এনসিপি-র পরিষদীয় দলনেতা জয়ন্ত পাটিল উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন। সূত্রের খবর, কংগ্রেস অধ্যক্ষ পদের দাবি ছেড়ে দিয়েছে। পরিবর্তে তারা ন’টি ক্যাবিনেট এবং চারটি প্রতিমন্ত্রীর পদ চায়। এসব নিয়েই কথাবার্তা চলছে। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চলে এসেছেন মুম্বইতে। সন্ধ্যায় তাঁরা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
গত শনিবার দেবেন্দ্র ফড়নবিস মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার আগেই শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেসের জোট নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তারা ক্ষমতায় এলে নরেন্দ্র মোদীর সাধের বুলেট ট্রেন প্রকল্প থেকে হাত গুটিয়ে নেবে। তারপর গত কয়েক দিনে মহারাষ্ট্রে রাজনীতির জল অনেক দূর গড়িয়েছে। অনেক নাটক শেষে বৃহস্পতিবার শপথ নিতে চলেছে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন তিন দলের জোট। সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভা গঠনের পরেই নতুন সরকার বুলেট ট্রেন প্রকল্প নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এদিকে নতুন জোট সরকার রাজ্যের সরকারি চাকরিতে ভূমিপুত্রদের ৮০ শতাংশ সংরক্ষণ দিতে চায়। যে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে এই তিন দল সরকার গড়ছে, সেই কর্মসূচিতেও বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। শিবসেনা জন্ম হয়েছিল এই ভূমিপুত্রদের স্বার্থরক্ষার প্রশ্নে। শিবসেনা প্রধান প্রয়াত বাল ঠাকরের অভিযোগ ছিল, উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের মানুষজন মহারাষ্ট্রে এসে ভূমিপুত্রদের চাকরির জায়গা দখল করে নিচ্ছে। বস্তুত, এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের মাধ্যমে শিবসেনা আজ এই জায়গায় পৌঁছেছে। মারাঠী অস্মিতাকে মূলধন করেই তাঁদের উত্থান। এবার শিবসেনা চায়, সরকারি চাকরিতে ভূমিপুত্রদের ভালো সংখ্যায় সংরক্ষণ থাকুক। জোট সরকারের বাকি দুই সঙ্গী এনসিপি এবং কংগ্রেসেরও এ ব্যাপারে নীতিগত আপত্তি নেই।
অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির খসড়া এনসিপি এবং কংগ্রেস নেতারা মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর কাছে পাঠিয়ে দেন। তাতে সনিয়া সম্মতি দিতেই ওই দুই দলের নেতৃত্ব শিবসেনার সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সূত্রের খবর, সেই আলোচনাতে ভূমিপুত্রদের চাকরির সংরক্ষণের বিষয়টি উঠে এসেছে। পাশাপাশি কৃষিঋণ মকুব করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। শিবসেনার নেতা আব্দুল সাত্তার জানান, কৃষকদের ঋণমকুব করা নতুন সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ।

Comments are closed.