রাজনৈতিক একতার অভাবই দেশে মন্দার আসল কারণ, বিস্ফোরক মন্তব্য মারুতি সুজুকি চেয়ারম্যানের

অর্থনৈতিক মন্দার আসল কারণ রাজনৈতিক একতার অভাব, এমনই অভিযোগ তুললেন মারুতি সুজুকির চেয়ারম্যান আর সি ভার্গব।
দেশজুড়ে তীব্র হচ্ছে অর্থনৈতিক মন্দা। ভারতের প্রধান সেক্টরগুলি মন্দার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। গাড়ি শিল্পে চাহিদার অভাবে গত কয়েক মাস ধরে পর্যায়ক্রমে বন্ধ হচ্ছে উৎপাদন, কর্মী ছাঁটাই হয়েছে দেদার। এই পরিপ্রেক্ষিতে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন দেশের অন্যতম গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা মারুতির চেয়ারম্যান আর সি ভার্গব। তাঁর অভিযোগ, দেশে রাজনৈতিক ঐক্যের অভাবই অর্থনৈতিক মন্দার মূল কারণ। এর ফলেই বিভিন্ন শিল্পে আজ বিনিয়োগের অভাব দেখা দিয়েছে, নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে। ভার্গবের কথায়, এই পরিস্থিতিতে আশু প্রয়োজন শিল্পের বৃদ্ধিতে সুস্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। জোড়াতালি দেওয়া চিন্তা-ভাবনাকে দূরে রাখতে হবে।
সম্প্রতি ইংরেজি দৈনিক দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মারুতির চেয়ারম্যান জানান, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং উৎপাদন বাড়ানোকে এই মুহূর্তে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তাঁর মতে, এই সময়ে সব রাজনৈতিক দলের প্রাথমিক কর্তব্য হওয়া দরকার, কীভাবে অর্থনীতিকে সুস্থিতি দেওয়া যায় এবং উৎপাদন সেক্টরগুলিতে কী ধরনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হচ্ছে তার খবর রাখা, সুবিধা-অসুবিধা বোঝা। ভার্গব আরও বলেন, এই আর্থিক মন্দা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও নীতি গ্রহণের জন্য গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনার সুযোগ দিয়েছে। আমরা কি সবাই একমত যে প্রাইভেট সেক্টরগুলিকে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরও সচেষ্ট হতে হবে? সবাই কি এতে সম্মতি জানাবেন? প্রশ্ন তোলেন ভার্গব। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল যদি এই সমস্যা বুঝে এগিয়ে আসে তাহলে এই মন্দা কাটানোর রাস্তা বেরবে। এটাই রাজনৈতিক ঐক্য। তাঁর ফের প্রশ্ন, দেশের ব্যাপারে আমাদের সবার একতা আছে তো?
এই আর্থিক বছরে অটোমোবাইল সেক্টরের মধ্যে বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মারুতি সুজুকি। মাসে মাসে পর্যায়ক্রমে উৎপাদন কমেছে, বিক্রি কমেছে তাদের। এই পরিস্থিতিতে ভার্গবের মত, নতুন বিনিয়োগ তখনই সম্ভব, যখন বাজারে চাহিদা দেখা যায়। প্রত্যেক বিনিয়োগকারীই চাহিদা অনুযায়ী বিনিয়োগ করেন। তিনি বলেন, মোদী সরকার এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করলেও তা হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। চটজলদি ফাটকা সহায়তা এই মন্দা দূর করতে পারবে না। সরকার এই সমস্যা দূর করলে বাদবাকি কাজটা শিল্পপতি ও বিনিয়োগকারীরা করে ফেলতে পারবেন। যেমন মারুতি সুজুকি নিয়ে তাঁদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হচ্ছে না বলে অভিযোগ চেয়ারম্যানের। ভার্গবের কথায়, এই মন্দার পরিবেশে কী করণীয়, আমরা সত্যিই তা ভেবে উঠতে পারেনি এখনও।

Comments are closed.