রবিবার নিট পরীক্ষা, ভিন জেলার পরীক্ষার্থীদের জন্য রাত্রিবাসের ব্যবস্থা, রাস্তায় অতিরিক্ত বাস, চলবে মেট্রোও

রবিবার সর্বভারতীয় মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা ভেবে শনিবারের লকডাউন প্রত্যাহার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিকে কলকাতার পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে পৌঁছতে যাতে অসুবিধার মুখে পড়তে না হয়, তার জন্য চালু থাকছে মেট্রো রেল পরিষেবা।

রবিবার অ্যাডমিড কার্ড দেখিয়ে অভিভাবকের সঙ্গে মেট্রোয় উঠতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। কলকাতা ও ইস্ট-ওয়েস্ট, দুই মেট্রো পরিষেবাই মিলবে সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত। নোয়াপাড়া থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর মোট ৩৭ জোড়া মেট্রো চালানো হবে। সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত মেট্রো চলবে ২০ মিনিট অন্তর। এই রুটে অবশ্য প্রতি রবিবার পরিষেবা বন্ধ থাকে। ব্যতিক্রম নিটের দিন। তবে এই রুটে ভিড় বিশেষ না থাকায় কোনও ই-পাসের বন্দোবস্ত থাকছে না।

ভিন জেলা বা রাজ্য থেকে কলকাতায় আসা NEET পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের জন্য রাত্রিবাসের বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন তৃণমূল সাংসদ তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বিদায়ী সভাপতি ডাক্তার শান্তনু সেন। বুধবার ফেসবুকে তিনি জানান, কলকাতায় আইএমএর গেস্ট হাউসে পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকছে বিশেষ ছাড়ের সুবিধা। এই পরিষেবা পেতে ১১ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার সন্ধে ৬টার মধ্যে ৮২৪০৭-১৬৩৫০ এই নম্বরে মেসেজ পাঠাতে হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ।

এছাড়াও একাধিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও রাজনৈতিক দলের তরফে পড়ুয়াদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। রবিবার বাড়তি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট রাস্তায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর।

এদিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এক একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ৪০ জন ছাত্রছাত্রীর বদলে পরীক্ষা দেবেন ১২ জন ছাত্র-ছাত্রী। নিট পরীক্ষার জন্য কলকাতার ৬৬ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির গাইডলাইন মেনে প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্র কীভাবে পরীক্ষার্থীরা ঢুকবেন, ক্লাস রুমগুলো কীভাবে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা থেকে শুরু করে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

রবিবার দুপুর দুটো থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অনলাইনে অথবা কাগজ-কলমে হবে নিট পরীক্ষা। আর তার জন্য একাধিক সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র। যেমন বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার ডিপিএস রুবি পার্ক স্কুলে গিয়ে দেখা গেল স্কুল চত্বর স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় স্কুলের ভেতরে বিভিন্ন অংশ এমনকী ক্লাস রুমগুলিও স্যানিটাইজ হয়। ছাত্রছাত্রীরা যে চেয়ারে বসে পরীক্ষা দেবেন এবং যে টেবিলে উত্তরপত্র রাখবেন, প্রত্যেকটি জায়গাই স্যানিটাইজার দিয়ে মোছার কাজ চলে। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির গাইডলাইন মেনে প্রত্যেকটি পরীক্ষাকেন্দ্রে রাখা হচ্ছে নির্দিষ্ট আইসোলেশন রুম। যদি কোনও ছাত্র-ছাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ৯৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে হয় তাহলে আইসোলেশন রুমে বসে পরীক্ষা দিতে হবে। দুপুর দুটো থেকে পরীক্ষা শুরু হলেও সকাল ১১ টার পর থেকেই ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকতে পারবেন। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি গাইডলাইন মেনে পরীক্ষার্থীরা যখন পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকবেন তখন তাঁদের বাইরের মাস্ক খুলে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে দেওয়া মাস্ক পরতে হবে। কলকাতার পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি ঠিক এভাবেই চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে রাখছে। শুক্রবার যেহেতু লকডাউন এবং তার পরে শনিবার মাত্র একটা দিন হাতে সময় থাকবে তাই বৃহস্পতিবার কিছু কিছু পরীক্ষাকেন্দ্র প্রস্তুতি এগিয়ে রেখেছে।

Comments are closed.