চিনা পণ্য রোধে কেন্দ্রের নয়া নিয়মবিধি কার্যকরের জন্য সময় চাইল অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট, বিদেশি পণ্যের রমরমা ঠেকাতে বদ্ধপরিকর মোদী সরকার
চিনা পণ্যের বিক্রি বন্ধ করতে সমস্ত ই-কমার্স সংস্থার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আনছে কেন্দ্র। যে পণ্য তারা বিক্রি করছে তার প্যাকেটের গায়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে বলা হচ্ছে সেটি ভারতীয় কিনা। তার জন্য পণ্যের গায়ে থাকতে হবে নির্দিষ্ট ‘চেক মার্ক’। কিন্তু কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ কার্যকরের জন্য আরও সময় চাইল অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট ইত্যাদি বিখ্যাত ই-কমার্স সংস্থা।
বুধবার শিল্প প্রচার ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য মন্ত্রক (DPTT) এর ভার্চুয়াল মিটিংয়ে ই-কমার্স সংস্থাগুলিকে আগামী ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যে চিনা পণ্যের বিক্রি রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ইংরেজি দৈনিক ইকনমিক টাইমস একটি সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানায়, ভারত-চিন দ্বন্দ্বের কারণেই এই দৃঢ় পদক্ষেপ দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
এই ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রিলায়েন্স রিটেল, জিও-র উচ্চপদস্থ কর্তা থেকে টাটা ক্লিক, স্ন্যাপডিল, স্যুইগি, জোম্যাটো, বিগ বাস্কেট, গোফার্সের মতো ই-কমার্স সংস্থার প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, বৈঠকে দেশিয় পণ্য চিহ্নিতকরণের জন্য ই-কমার্স সংস্থাগুলিকে কার্যকরী পদক্ষেপ করতে এবং নয়া ই-কমার্স পলিসি মেনে চলতে বলেন কেন্দ্রের আধিকারিকরা। তাঁরা জানান, সংশ্লিষ্ট ই-কমার্সের ওয়েবসাইটে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে সেটি দেশে উৎপাদিত কিনা। সরকারি সূত্রে খবর, অফলাইন হোক বা অনলাইন, কোনও পণ্য কেনার আগে ক্রেতারা এবার থেকে দেখে নিতে পারবেন সেটি ভারতে তৈরি কিনা। তবে জিনিস কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ক্রেতারাই। এ নিয়ে শীঘ্রই ই-কমার্স সংস্থাগুলির মতামত চেয়েছে কেন্দ্র।
স্ন্যাপডিল, পেটিএমের মতো কিছু সংস্থা কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে সাড়া দিয়েছে বলে খবর। তারা তেমন কোনও আপত্তি জানায়নি এই বৈঠকে। তবে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট সরকারিভাবে এখনই কোনও মতামত দিতে চায়নি। ইকনমিক টাইমস সূত্রে খবর, পণ্যের উৎপত্তি, কোন দেশে সেটি তৈরি এই তথ্য দেওয়া খুব কঠিন কিছু নয় বলে জানাচ্ছেন এদের মধ্যে একটি ই-কমার্স সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্তা। কিন্তু কোন দেশে পণ্য তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে বিশদ বিবরণ দেওয়া এবং যে পণ্যগুলি সরকারের নিয়মবিধি পূরণ করতে পারছে না তাদের সরিয়ে রাখার মত পদক্ষেপ ই-কমার্স আইনে কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করার সময় চেয়েছে কয়েকটি ই-কমার্স সংস্থা। যার মধ্যে অন্যতম নাম অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট।
প্রসঙ্গত, ভারত-চিন দ্বন্দ্বের মধ্যে সরকারের নয়া ই-কমার্স পলিসিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ ক্যাম্পেনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, নয়া ই-কমার্স পলিসিতে যারা আবশ্যিক বিধি মানবে না, বা ভুল তথ্য দেবে তার শাস্তি বিধানের জন্য নিয়ন্ত্রক রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। এই পলিসিতে আলাদাভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে দেশের ই-কমার্সের বৃদ্ধি, বেকারদের চাকরি, গ্রামীণ উৎপাদনশীলতা এবং রফতানির প্রচারের উপর।
Comments are closed.