হোস্টেল ফি বৃদ্ধি এবং পড়াশোনার খরচ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে (New Education Policy Protest) গত কয়েকদিন ধরেই লাগাতার আন্দোলন চলছে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে পড়াশোনার খরচ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না, শিক্ষার এই বাণিজ্যকরণের প্রতিবাদে তাই দিল্লির রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন জেএনইউ-এর ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রতিবাদী ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধও হয়েছে, পড়ুয়াদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের রাত কাটাতে হয়েছে জেলে।
কিন্তু শুধু জেএনইউ বললে ভুল হবে, দেশের নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আইআইটি’র মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদের সুর শোনা যাচ্ছে। সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি, বেসরকারিকরণের চেষ্টা চলছে সরকারি ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির।
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের শিক্ষা নীতির প্রতিবাদে এবার দেশজুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের (New Education Policy Protest) ডাক দিল একাধিক ছাত্র সংগঠন। আগামী ৮ জানুয়ারি দেশের সর্বত্র স্কুল থেকে কলেজস্তর পর্যন্ত এই ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়স্তর পর্যন্ত শিক্ষার খরচ কমাতে হবে। যেভাবে লাগামহীন অ্যাডমিশন ফি নেওয়া হচ্ছে, পড়ার খরচ বৃদ্ধি হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যাবে না। পাশাপাশি, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বেসরকারিকরণের যে চেষ্টা কেন্দ্র করছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো। প্রতিবাদী ছাত্র সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের এই শিক্ষা নীতির প্রতিবাদে লাগাতার আন্দোলনের পথে নামবে তারা। প্রতি রাজ্যে তৈরি করা হবে বিজেপির ছাত্র বিরোধী নীতির প্রতিবাদে একটি করে কমিটি।
জনগণের করের টাকা দিয়ে মূর্তি না বানিয়ে, কর্পোরেট ট্যাক্সে ছাড় না দিয়ে, শিক্ষায় বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। তাঁদের দাবি, সরকারকে সকলের নাগালের মধ্যে কম পয়সায় প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দিতে হবে। বিনামূল্যে বা স্বল্প খরচে উচ্চ শিক্ষার অধিকার না দিয়ে ঘুরিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে বলেও বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, শিক্ষাকেন্দ্রে জাতপাত নিয়ে এসে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীর অধিকার অমান্য করা হচ্ছে। আটকে রাখা হচ্ছে বা দেওয়া হচ্ছে না স্কলারশিপের টাকা, ফেলোশিপের টাকা।
আন্দোলনকারীদের স্পষ্ট দাবি, কোনওভাবেই গৈরিকীকরণের চেষ্টা শিক্ষা ব্যবস্থায় মেনে নেওয়া হবে না। একই সঙ্গে কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ করেছেন ছাত্ররা। এর প্রতিবাদে আগামী ১১ জানুয়ারি দেশজুড়ে বিলের প্রতিলিপি পোড়ানো হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা।
Comments are closed.