চ্যানেলে হিন্দু বিরোধী খবর প্রচারিত হচ্ছে। বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাত করা হচ্ছে। নিউজ 18 তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে দিল্লির হেড অফিসে এমনই অভিযোগ জানিয়েছিলেন জনৈক ইউটিউবার মারিদহাস। এই ঘটনার পর চ্যানেলের এডিটর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সিনিয়র সাংবাদিক এম গুনাশেখরন।
ঘটনার সূত্রপাত জুলাই মাসের শুরুর দিকে। মারিদহাস নামে এক ইউটিউবার নিউজ 18 তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট খবর সম্প্রচারের অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, নিউজ 18 তামিলনাড়ু স্থানীয় দুই রাজনৈতিক দল ডিকে এবং ডিএমকের প্রতি অতিরিক্ত সদয়। চ্যানেলে হিন্দু বিরোধী খবর পরিবেশন করা হয়। এতে হিন্দুদের আবেগ আহত হয়েছে। কয়েকজন সাংবাদিক ও চ্যানেলের এডিটর ছিলেন ওই ইউটিউবারের নিশানায়। এই প্রসঙ্গে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একের পর এক ভিডিও পোস্ট করতে থাকেন তিনি। পাশাপাশি মারিদহাস নামে ওই ইউটিউবার তাঁর সমস্ত অভিযোগ লিখিতভাবে জমা দেন দিল্লিতে নিউজ 18 এর সদর দফতরেও।
একটি ভিডিওয় ওই ইউটিউবার দাবি করেন, তাঁর করা সমস্ত অভিযোগকে মান্যতা দিয়েছে নিউজ 18 কর্তৃপক্ষ। নিজের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে একটি ইমেলও দেখান মারিদহাস। যদিও নিউজ 18 টিম জানিয়েছে, এমন কোনও ইমেল তারা পাঠায়নি।
তারপর চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ওই ইউটিউবারের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি মাদ্রাজ হাইকোর্টে মানহানির মোকদ্দমাও দায়ের করে। আদালত মারিদহাসকে এই সংক্রান্ত সমস্ত ভিডিও সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। তার ঠিক ২ দিনের মধ্যেই চ্যানেলের সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন এম গুনাশেখরন। অফিসে শেষ দিন সহকর্মীদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন তামিলনাড়ুর এই সিনিয়র সাংবাদিক। তাতে লিখেছেন, কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি ক্ষোভ কিংবা ভালোবাসা জানানোর জায়গা সংবাদমাধ্যম নয়। আমার এতদিনের সাংবাদিকতা জীবনে এটাই বরাবর প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে গিয়েছি। সাংবাদিকের দায়বদ্ধতা রাজনৈতিক দলের কাছে নয়, মানুষের কাছে।
তামিলনাড়ুর দুই রাজনৈতিক দল ডিকে ও ডিএমকের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ সম্বন্ধে গুনাশেখরন লিখেছেন, আমার নেতৃত্বে আমাদের চ্যানেলে যেমন এআইএডিএমকে প্রধান হিসেবে শশীকলার সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করেছি, ঠিক তেমনই ডিএমকে প্রেসিডেন্ট এম কে স্ট্যালিন কিংবা মুখ্যমন্ত্রী পলানিস্বামীরও ইন্টারভিউ চ্যানেলে এয়ার হয়েছে। তাই নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি অতিরিক্ত সদয় হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। সেটা সাংবাদিকের কাজ না।
সহকর্মীদের উদ্দেশ্য করে লেখা খোলা চিঠির একেবারে শেষে গুনাশেখরন বলছেন, একটি সংস্থা কিংবা ব্যক্তিগত জীবন, পরিবর্তনই ধর্ম। তাই অতীতে কী হয়েছে, তা নিয়ে আটকে না থেকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। হ্যাঁ, নিউজ 18 তামিলনাড়ুর সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। এখানে সকলের যা ভালোবাসা পেয়েছি, তা আগামী দিনে আমার এগিয়ে চলার পাথেয় হবে। কিন্তু শুধুমাত্র ইউটিউবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সিনিয়র সাংবাদিক ইস্তফা দিলেন কিনা তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা অব্যাহত।
Comments are closed.