নিউটাউনের সুখবৃষ্টি আবাসনে এসটিএফের এনকাউন্টারে মারা যায় পাঞ্জাবের দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল সিংহ ভাল্লার এবং যশপ্রীত খারার। সেই অপারেশনেই আহত হয়েছেন এসটিএফের ইন্সপেক্টর কার্তিকমোহন ঘোষ।
এ যেন অ্যামাজন প্রাইম ছেড়ে ফ্যামিলি ম্যান নেমে এসেছে কলকাতায়। পাঞ্জাবের গ্যাংস্টারদের ধরতে এসে গুলির মুখে এসটিএফ। পাল্টা সুখবৃষ্টিতে গুলি বৃষ্টি এসটিএফের। মৃত্যু ২ দুষ্কৃতীর।
দুষ্কৃতীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জখম হন এসটিএফের ইন্সপেক্টর কার্তিক মোহন ঘোষ। জানা যাচ্ছে তাঁর বাঁ কাঁধ ফুটো করে বেরিয়ে যায় দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলি।
মহানগরীর উপকণ্ঠে সম্ভ্রান্ত এলাকায় এই এনকাউন্টারের ঘটনায় সারা শহরে তীব্র চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে।
আদতে নদিয়ার করিমপুরের বাসিন্দা ইন্সপেক্টর কার্তিকমোহন ঘোষ। কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে সুখবৃষ্টি আবাসনেই ভাড়া থাকতেন কার্তিকমোহন বাবু। সূত্রের খবর, গোপন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে ওই আবাসনেই গা ঢাকা দিয়ে আছে ২ দাগী দুষ্কৃতী। তারপর থেকে দুষ্কৃতীদের গতিবিধির উপর নজর রাখছিলেন কার্তিকমোহন বাবুরা।
সমস্ত আটঘাট বেঁধে বুধবার দুপুরেই অপারেশন জ্যাক শুরু হবে বলে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন শীর্ষ আধিকারিকরা। বেলা তিনটে নাগাদ ওই আবাসনে পৌঁছে যায় এসটিএফের টিম। শুরু হয় রুদ্ধশ্বাস অপারেশন জ্যাক।
নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটে দরজায় নক করতেই দুষ্কৃতীরা সজাগ হয়ে যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলি চালাতে শুরু করে পাঞ্জাবের ২ গ্যাংস্টার। এমনটা যে হতে পারে তার প্রস্তুতি নেওয়া ছিল এসটিএফের। পাল্টা জবাব আসে এসটিএফের অত্যাধুনিক গ্লক পিস্তল থেকে। পাল্টা গুলি বৃষ্টিতে নাজেহাল করে ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ে এসটিএফ। সেই সময় বেডরুম থেকে গুলি চালাচ্ছে ২ দুষ্কৃতী। প্রবল ধস্তাধস্তির মধ্যে কার্ত্তিক মোহন ঘোষ এক দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেন। তখনই কার্তিকমোহনকে লক্ষ্য করে ফায়ার করে অপর দুষ্কৃতী। গুলি লাগে বাহুসন্ধিতে। আর দেরি করেনি এসটিএফ। গ্লক পিস্তল গর্জে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে নিকেশ পাঞ্জাবের দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টার।
জানা গিয়েছে, খুব সম্প্রতি বীরভূম থেকে বদলি হয়ে এসটিএফে যোগ দেন কার্তিকমোহন বাবু। কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে কার্তিক মোহন ঘোষ ভাড়া থাকেন ওই সুখবৃষ্টি আবাসনেই। ফলে অকুস্থল হাতের তালুর মতো চেনা অপারেশন জ্যাকের অন্যতম স্তম্ভ কার্তিকমোহন ঘোষের।
বর্তমানে কার্তিকমোহন ঘোষ সল্টলেকের আমরি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার তাঁর এমআরআই হবে। ইএমজি পরীক্ষাও হতে পারে। গুলির আঘাতে নার্ভ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা জানতেই এই পরীক্ষা।
Comments are closed.