ভারতে ফেসবুকের পক্ষপাতমূলক আচরণের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থার দাবিতে জুকেরবার্গকে খোলা চিঠি দিল ৪০ টির বেশি NGO
ভারতে ফেসবুকের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ করুন, আবেদন জানিয়ে মার্ক জুকেরবার্ককে খোলা চিঠি দিল ৪০ টির বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। আঁখি দাসকে ছুটিতে পাঠানোর আর্জি।
অ্যালায়েন্স অফ সাউথ এশিয়ান্স টেকিং অ্যাকশন (ASATA), অ্যাসপিরেশন টেক, ইন্ডিয়ান আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিল, মিডিয়া জাস্টিস, ফাইট ফর জাস্টিস, সখি ফর সাউথ এশিয়ান উইমেন সহ ৪০ টির বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খোলা চিঠি দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে। ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মার্ক জুকেরবার্ক ও সিওও শেরিল স্যান্ডবার্গকে লেখা ওই চিঠিতে ভারতে ফেসবুকের বিরুদ্ধে যে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে, তার দ্রুত ও সদর্থক নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত হয় “Facebook Hate-Speech Rules Collide With Indian Politics – Company executive opposed move to ban controversial politician” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন। তা ঘিরে ভারতের রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে কাঠগোড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে ফেসবুক ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষকে। অভিযোগ, ভারতে ব্যবসা বৃদ্ধি করতে হিন্দুত্ববাদী এবং বিজেপি নেতা ও কর্মীদের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, আপত্তিজনক বিষয়বস্তুকে লাগাতার ছাড় দিয়ে গিয়েছে ফেসবুক। ভারতের শাসক দল, তার নেতা ও কর্মীদের আপত্তিকর এবং বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে না ফেসবুক। তার কদিনের মধ্যেই টাইম ম্যাগাজিনেও একই বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যা নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপিকে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। এবার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থারা ফেসবুকের দ্বারস্থ হল।
খোলা চিঠিতে মার্ক জুকেরবার্কের উদ্দেশে তারা লিখেছে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে তারা বিশেষভাবে চিন্তিত। চিঠিতে উঠে এসেছে ভারতে ফেসবুকের পলিসি হেড আঁখি দাসের বিরুদ্ধে ওঠা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের কথাও। টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনের উল্লেখ করে চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, অন্তত সাত বছর ধরে ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে ভারতে বিদ্বেষ ও দাঙ্গা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
২০১৩ সালের উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরের দাঙ্গায় ৬২ জনের প্রাণ গিয়েছিল এক বিজেপি নেতার বিদ্বেষমূলক ভিডিওর পর। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি চিঠিতে লিখেছে, ভারতে ব্যবসা চালানোর ক্ষেত্রে ফেসবুকের অবশ্যই উচিত মানবাধিকারের দিক খেয়াল রাখা। জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে যে সব অভিযোগ ফেসবুকের বিরুদ্ধে উঠেছে তার দ্রুত নিষ্পত্তি চেয়ে মর্ম জুকেরবার্কের কাছে আবেদন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থারা। পাশাপাশি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আঁখি দাসকে ছুটিতে পাঠানোর জন্যেও আবেদন করা হয়েছে।
Comments are closed.