দেশের অলাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির আংশিক অথবা পূর্ণ বেসরকারিকরণ বা বিপুল বিলগ্নীকরণের সিদ্ধান্ত আগেই ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার।
কেন্দ্রের এই তালিকার একেবারে প্রথমেই ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার নাম। সরকারি এই বিমান পরিবহণ সংস্থাটির সম্পূর্ণ বেসরকারিকরণের কথা চলতি অর্থবছরের বাজেট পেশের সময় সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সেই পথে হেঁটেই এবার একেবারে সময়সীমাও জানিয়ে দিলেন সীতারমন। চলতি অর্থবর্ষের মধ্যে, অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হতে চলেছে এয়ার ইন্ডিয়াকে, শনিবার এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
তবে শুধু এই বিমান সংস্থাটিই নয়, অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন এয়ার ইন্ডিয়ার পাশাপাশি দেশের অন্যতম রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোলিয়াম সংস্থা ভারত পেট্রোলিয়াম লিমিটেডও তুলে দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি হাতে। মনে করা হচ্ছে চলতি অর্থবর্ষে বিলগ্নীকরণের মাধ্যমে যে এক লক্ষ কোটি টাকা নিজেদের ভাঁড়ারে তোলার পরিকল্পনা নছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই দুই সিদ্ধান্ত সেই ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
শ্রমিক সংগঠনগুলি এবং দেশের বিরোধী দলগুলি যতই প্রতিবাদ করুক নিজেদের এই সিদ্ধান্তে যে সরকার অনড় এদিন তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, এই দুটি সংস্থা কেনার জন্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে। বিশেষত এয়ার ইন্ডিয়াকে বিক্রির জন্য বিদেশের মাটিতে যে রোড শো করা হচ্ছে তাতে যথেষ্ট সাড়া মিলেছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যুক্তি দিয়েছেন, বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তাই চলতি অর্থবর্ষে মার্চ মাসের মধ্যেই সম্ভবত গোটা বিষয়টি পাকা হয়ে যাবে।
পাশাপাশি, এদিন দেশের আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও ফের আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। নির্মলা বলেছেন, মন্দার হাত থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কেন্দ্র এবং ইতিমধ্যে তার সুফল মিলতে শুরু করেছে। তাঁর দাবি, একাধিক ক্ষেত্র ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে মন্দার কবল থেকে। এমনকী বেশ কিছু ক্ষেত্রে শিল্পপতিরা নয়া বিনিয়োগের কথাও ভাবছেন বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী জিএসটি আদায় হচ্ছে না। তবে ক্রেতাদের মধ্যে যে চাহিদা বাড়ছে সে বিষয়ে যুক্তি দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, উৎসবের মরসুমে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক প্রায় ১.৮ কোটি টাকার লোন দিয়েছে। মন্ত্রীর দাবি, চাহিদা বাড়ছে বলেই এই বিপুল পরিমাণ লোন দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তাঁর আশা কেন্দ্রের পদক্ষেপ এবং এই চাহিদার উপর ভর করে মন্দার প্রভাব কাটিয়ে ছন্দে ফিরবে দেশের অর্থনীতি।
Comments are closed.