সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কেন্দ্রের পুনর্বিবেচনা করা দরকার বলে জানালেন বিহারে বিজেপির জোট শরিক জেডিইউ নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। বিজেপির জোট শরিকদের মধ্যে নীতিশ কুমারই প্রথম, যিনি প্রকাশ্যে নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভাবনা-চিন্তার প্রয়োজনীয়তার কথা বললেন।
সোমবার বিহার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রকাশ্যে বিতর্ক করতে তিনি রাজি। সংসদে নীতিশ কুমারের দল নাগরিকত্ব বিলকে সমর্থন করেছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার যখন কেন্দ্র গেজেট নোটিফিকেশন করে নয়া নাগরিকত্ব আইন চালুর কথা ঘোষণা করেছে, তখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ। এছাড়া নীতিশ কুমার এও ঘোষণা করেন, বিহারে এনআরসি প্রয়োগের কোনও প্রয়োজন নেই। এনআরসি শুধু অসমের জন্য।
এদিন বিহার বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কড়া ভাষায় জেডিইউ-র সমালোচনা করে লালু প্রসাদ যাদবের আরজেডি এবং বামেরা। বিরোধীদের অভিযোগের পরেই নীতিশ কুমার বলেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিতর্কের প্রয়োজন রয়েছে। যদি সবাই চান, তাহলে এ নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হোক। আর এনআরসি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিহারে চালু করার ব্যাপারে কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তাই এ নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনেরও কোনও দরকার নেই।
কেন্দ্রের নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে একেবারে প্রথমেই প্রশ্ন তুলেছিলেন জেডিইউ-র সহ সভাপতি প্রশান্ত কিশোর। সংসদে তাঁর দলের সাংসদরা যখন এই বিলের সমর্থনে ভোট দিয়েছেন, তখন প্রকাশ্যে বিলের বিরোধিতা করেন তিনি। রবিবারও একটি ট্যুইটে কংগ্রেসকে তিনি ধন্যবাদ জানান সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র বিরোধিতা করার জন্য। পাশাপাশি, ওই ট্যুইটে প্রশান্ত কিশোর লেখেন, বিহারবাসীকে ফের আশ্বস্ত করছি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কিংবা এনআরসি এ রাজ্যে চালু হবে না। তবে নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে জেডিইউ প্রধান নীতিশ কুমারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। দলের অন্দরে নাগরিকত্ব আইনের সমালোচনা করলেও সংসদে নীতিশ কুমারের দলের সাংসদরা এই বিলকে সমর্থন করায় ক্ষুব্ধ ছিলেন জেডিইউ-র একাধিক নেতা।
সেদিক থেকে সোমবার বিহার বিধানসভায় নীতিশ কুমারের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। এনপিআর নিয়ে তিনি জানান, যে যে বিষয়গুলি নিয়ে আপত্তি রয়েছে তা খতিয়ে দেখবেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ১৯ জানুয়ারি তিনি তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে দেবেন।
Comments are closed.