২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে দেশজুড়ে তো বটেই, অসমেও দ্বিতীয়বারের জন্য হবে এনআরসি, এমনটাই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে (ক্যাব) সহজেই ছাড়পত্র দিয়েছে মোদী সরকার। আগামী ৯ ডিসেম্বর তা লোকসভায় পেশ হবে। এই বাতাবরণে অসম থেকে ত্রিপুরায় ছড়িয়ে পড়ছে গণআন্দোলন। কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে অসমে আসু, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, এজেওয়াইসিপি সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বে দ্রুত ছড়াচ্ছে আন্দোলন। অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু), একসময়ে যার সভাপতি ছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল, এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির বক্তব্য, প্রকৃত ভারতীয়দের স্বার্থেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে তারা। ৮ ডিসেম্বর যদি সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে এই বিলের বিরোধিতায় শীর্ষ আদালতে যাওয়ার জন্য বৈঠক করছে আসু। অসমের ডিব্রুগড়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন থেকে শুরু করে রাস্তায় রাস্তায় শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীদের কুশপুতুল দাহ ও প্রতিবাদ মিছিল।
অন্যদিকে, ত্রিপুরাতেও তৈরি হচ্ছে আন্দোলনের ভিত। বিজেপি বিরোধী দল ও সংগঠনগুলি রাস্তা থেকে রেলপথ আটকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ শুরু করেছে। আন্দোলনকারীদের কথায়, বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে বার করার নামে যে আদিবাসীদের তাড়ানোর প্রয়াস চলছে, তার বিরোধিতায় এই প্রতিবাদ।
গুয়াহাটি থেকে আসু-র সাধারণ সম্পাদক লুরিনজ্যোতি গগৈ জানান, সাধারণ মানুষের বার্তা না শুনলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত তাঁরা। গগৈ-র অভিযোগ, আগামী সপ্তাহে এই বিল পাশ করিয়ে অসম আন্দোলনের শহি খড়গেশ্বর তালুকদারের স্মরণে শহিদ দিবসকেই ব্যর্থ করার পরিকল্পনা করছে সরকার। তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন আসু-র সাধারণ সম্পাদক।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে এ দেশে আসা ছয় অমুসলিম ধর্মের মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে। যার বিরোধিতায় ফের উত্তপ্ত হচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চল।
Comments are closed.