এনপিআর একটা উদ্ভট ও অমানুষিক চিন্তা, যাতে প্রত্যেকের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, ফের মোদী সরকারকে নিশানা অমর্ত্য সেনের।
বুধবার প্রতীচী ট্রাস্টের উদ্যোগে এশিয়াটিক সোসাইটিতে ‘লিভিং ওয়ার্ল্ড অফ দ্য আদিবাসিজ অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি, এনপিআর হল আর একটি পাগলামো। এটা দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রের বিরোধী। আমাদের সংবিধান বলে, কোনও জাতির মধ্যে বৈষম্য রাখা উচিত নয়। সেখান থেকে এই জাতীয় জনগণনা পঞ্জি (এনপিআর) বৈষম্যমূলক, অসাংবিধানিক ও অমানুষিক বলে মন্তব্য করেন অমর্ত্য সেন।
আরও জানতে ক্লিক করুন, পয়লা এপ্রিল শুরু এনপিআর, প্রথম ফর্ম পূরণ করবেন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ
এনপিআর কি আদিবাসীদের নাগরিকত্বকে প্রভাবিত করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদের দাবি, শুধু আদিবাসী নয়, যে কোনও মানুষের নাগরিক অধিকারে আঘাত হানবে এনপিআর। তাঁর কথায়, এমনকী আমার কাছেও নিজের বয়সের বৈধ শংসাপত্র নেই। আমার বাবা-মায়েরও কোনও জন্ম-প্রমাণপত্র ছিল না।
সুপ্রিম কোর্টে নয়া নাগরিকত্ব আইনের ভবিষ্যৎ নিয়ে কী বলেছিলেন অমর্ত্য সেন? আরও জানতে ক্লিক করুন
পাশাপাশি ভারতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আদিবাসীরা ‘উপেক্ষিত’ বলেও মন্তব্য করেন অমর্ত্য সেন। পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসীদের নিয়ে প্রতীচী ইনস্টিটিউট ও এশিয়াটিক সোসাইটির ওই যৌথ রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানের পর অর্থনীতিবিদ মন্তব্য করেন, ভোট নেওয়ার জন্য আদিবাসীদের নিয়ে অনেক কথাই বলা হয়। কিন্তু তাঁদের সত্যিকারের উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয় না। এর ফলেই তাঁরা পিছিয়ে রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসীদের ক্ষেত্রেও সেই একই ছবিই দেখা যায়। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে আদিবাসীদের অবস্থা ঠিক কেমন, এই প্রশ্নের উত্তরে অমর্ত্য সেন বলেন, খারাপ অর্থনীতির প্রভাব তো অবশ্যই তাঁদের উপরও পড়েছে। তবে এখন আদিবাসীদের নাগরিক অধিকারও খর্ব হচ্ছে। সরকারের বিরোধিতা করলে দেশবিরোধী তকমা জুটছে। বিদেশ থেকে এসে কেউ সমালোচনা করলে তাঁকে বিমানে চাপিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
Comments are closed.