এনপিআর ফর্মে বাবা-মায়ের জন্মস্থান বলা বাধ্যতামূলক নয়, চাইলে এই অংশটি এড়িয়ে যেতে পারেন নাগরিকরা। এনপিআর নিয়ে সরকারি বৈঠকে জানাল কেন্দ্র।
এই প্রথমবার এনপিআর ফর্মে বাবা-মায়ের জন্মস্থান উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে। যা নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছে বিরোধী দলগুলি। তাদের অভিযোগ, এনপিআর আসলে দেশজুড়ে এনআরসি চালু করার প্রথম ধাপ। তাই এনপিআর প্রক্রিয়াও বন্ধ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও কেরল সরকার। শুক্রবার বাংলা বাদে সব রাজ্যই জনগণনা ও জাতীয় জনগণনাপঞ্জি নিয়ে সরকারি বৈঠকে উপস্থিত ছিল। সেখানে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির তরফে রেজিস্ট্রার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (আরজিআই)-এর কাছে আর্জি জানানো হয়, এনপিআর ফর্ম থেকে ‘বাবা ও মায়ের জন্মস্থান’ নামে যে কলামটি রয়েছে তা বাদ দিতে হবে।
বিরোধীদের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আরজিআই এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দীর্ঘ আলোচনার পর জানিয়েছে, পিতা-মাতার জন্মস্থান বলা আবশ্যিক নয়। চাইলে নাগরিকরা এই বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারেন।
শুক্রবারের বৈঠকে জনগণনা ও জাতীয় জনগণনাপঞ্জির উদ্দেশ্য উপস্থাপিত করা হয়। পাশাপাশি এনপিআরের উপযোগিতা এবং সেন্সাসে এই প্রথমবার মোবাইল অ্যাপের ব্যবহারের সুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়। এরপরেই বিরোধীরা দাবি করে, এনপিআর থেকে বাবা-মায়ের জন্মস্থানের কলামটি বাদ দিতে হবে। রাজস্থানের মুখ্যসচিব ডিবি গুপ্তা বলেন, অধিকাংশ রাজ্য এনপিআরের বিরোধিতা করছে এই নয়া কলামের কারণে। গ্রামাঞ্চল এমনকী শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই তাঁদের বাবা-মায়ের জন্মস্থান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। তাহলে এই রকম একটি কলাম রাখার কারণ কী? তাই কেন্দ্রের কাছে আমাদের দাবি, সংশ্লিষ্ট কলামটি বাতিল করা হোক। এই প্রসঙ্গে সরকারের এক পদস্থ আমলা জানান, এনপিআর ফর্মের এই অংশটির উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, ‘স্বেচ্ছাকৃত’ অংশ।
এদিকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে দেশজোড়া তীব্র আন্দোলনের পরিস্থিতিতে আরজিআই-কে পশ্চিমঙ্গ ও কেরল সরকার জানিয়ে দিয়েছে, তাদের রাজ্যে এনপিআর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হচ্ছে। শুক্রবারের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি বলেন, এনপিআর-এর তথ্য সংগ্রহের জন্য কাউকে বাধ্য করা হবে না। পাশাপাশি তিনি জানান, এনপিআর ও সেন্সাসের কাজে কোনও কাগজপত্রও দেখাতে হবে না। এনপিআরের সঙ্গে এনআরসি-র কোনও সম্পর্কই নেই বলে ফের দাবি করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী।
Comments are closed.