আট দফার দীর্ঘ ভোট প্রক্রিয়া চলার ফলেই রাজ্যে হু হু করে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে ফের একবার দাবি করলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি।
এদিন তিনি পরিসংখ্যান তুলে ধরে অভিযোগ করেন নির্বাচনের ফলে কীভাবে রাজ্যে মাত্রাতিরিক্ত সংক্রমণ বাড়ছে। পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, প্রথম দফায় ভোটের সময় রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৮১২, এবং করোনায় মৃতের সংখ্যা ছিল মাত্র ২ জন। সপ্তম দফার নির্বাচনের আগের দিন অর্থাৎ ২৫ এপ্রিল রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ১৬ হাজার এবং মৃতের সংখ্যা ৫৭ জন।
তিনি আরও বলেন, ১ এপ্রিল পজেটিভ কেসের সংখ্যা ছিল, ৬,৫১৩ জন, আর ২২ এপ্রিল সংখ্যাটা বেড়ে হয়, ৬৮,৭৯৮ জন। রাজ্যে পঞ্চম দফার ভোট ছিল, ১৭ এই এপ্রিল।
তৃণমূল নেতার অভিযোগ তাঁদের নেত্রী মমতা ব্যানার্জি বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের কথা উল্লেখ করে একাধিকবার নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছেন শেষ তিন দফার ভোট একসঙ্গে করানোর। কিন্তু কমিশনের কর্তারা মমতা ব্যানার্জির কথায় কর্নপাত করেননি। শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, সংখ্যা থেকে প্রমাণিত, মমতা ব্যানার্জি যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, তা সত্যি।
রাজ্য তথা দেশজুড়ে অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়েও এদিন বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, অক্সিজেন সরবরাহের সম্পূর্ণ দায়িত্ব কেন্দ্রের। জানান, ২০২০ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে অক্সিজেন সরবরাহের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় । তাঁর অভিযোগ, বিপর্যয়ের মধ্যেও অক্সিজেন রফতানির পরিমাণ চলতি বছরে ৭৩৪% বেড়েছে। তার জেরেই দেশে অক্সিজেন সংকট বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ বিজেপি শাসিত রাজ্যে যেখানে অক্সিজেনের প্ল্যান্ট ২১ টি, এবং অবিজেপি শাসিত রাজ্যে ৮ টি সেখানে পশ্চিমবঙ্গে একটিও প্ল্যান্ট করেনি কেন্দ্রীয় সরকার।
[আরও পড়ুন- মাদ্রাজ হাইকোর্ট আর তৃণমূল এক সুরে কথা বলছে! মন্তব্য বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের]
একই ভ্যাকিসনের কেন্দ্র ও রাজ্যে আলাদা আলাদা দাম নিয়েও সরব হন তৃণমূল নেতা। সেই সঙ্গে বলেন, এই মুহূর্তে দেশে করোনা টিকার চাহিদা দৈনিক ৪০ লক্ষ, যেখানে তৈরি হচ্ছে ২০ লক্ষ। ১ মে থেকে কেন্দ্রের সরকার ১৮ এর বছরের বেশি সকলকে ভ্যাকিসন দেওয়ার কথা ঘোষণা করছে। পার্থ চ্যাটার্জির অভিযোগ, ভ্যাকসিনের এই বিপুল যোগান নিয়ে কোনও সুষ্পষ্ট পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় সরকার প্রকাশ করেনি।
তাঁর কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলা জয়ের জন্য ৯০% শতাংশ মনোনিবেশ করেছিলেন, দেশের কাজ করেছেন ১০% । মোদী সরকারের চূড়ান্ত অপদার্থতার জন্য দেশে আজকে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি বলে দাবি তৃণমূলের মহাসচিবের।
Comments are closed.