ঝাড়খণ্ডের ৪ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করল পুলিশ। অভিযোগ, বিকাশ কোরা, ধরম কিশোর কুল্লু, ইমিল ওয়াল্টার কান্দুলনা ও ঘনশ্যাম বিরুলি নামে ৪ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের খেপিয়ে তুলছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালের ২৬ শে জুন। পুলিশের অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডের খুন্তিতে বিজেপি সাংসদ কারিয়া মুণ্ডার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৪ পুলিশকর্মীর উপর তির-ধনুক, ইট-পাটকেল নিয়ে হামলা চালায় মুন্ডা সম্প্রদায়ের কয়েকজন আদিবাসী। পুলিশের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় মুন্ডা সম্প্রদায়ের মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলছেন ‘আদিবাসী মহাসভা’ ও ‘এ সি ভারত সরকার কুটুম্ব পরিবার’ এর সদস্যরা। তার জেরেই এই ঘটনা।
পাথালগাড়ি প্রথায় পাথর দিয়ে দাগ কেটে নিজেদের এলাকা নির্ধারণ করে কয়েকটি আদিবাসী সম্প্রদায়। ঝাড়খণ্ডের খুন্তি, আর্কি ও মুরহু এলাকার আদিবাসীদের মধ্যে এই প্রথা বহু পুরনো।
অভিযোগ, ফেসবুকে এই প্রথার সমর্থনের নামে কার্যত সরকার বিরোধিতা চালাতেন আদিবাসী মহাসভা ও সরকার কুটুম্ব পরিবারের সদস্যরা। প্রশাসনের অভিযোগ, এভাবেই আদিবাসীদের ভুল বুঝিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে ইন্ধন যোগানো হয়। ২০১৭ সালে খুন্তি থানায় এই ৪ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়। অন্যদিকে, এফআইআর খারিজের দাবি নিয়ে পাল্টা ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে যান বিকাশ কোরা, ধরম কিশোর কুল্লু, ইমিল ওয়াল্টার ও ঘনশ্যাম বিরুলি। বৃহস্পতিবার মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী সওয়াল করেন, হিংসার উদ্রেক না করে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা কখনোই দেশদ্রোহিতা হতে পারে না। অন্যদিকে সরকার পক্ষের আইনজীবী পাল্টা জানান, মামলাকারীদের বেশ কিছু পোস্ট উসকানিমূলক ও সরকার বিরোধী। বিচারপতির কাছে মামলাকারীদের করা কয়েকটি ফেসবুক পোস্টও তুলে ধরেন সরকার পক্ষের আইনজীবী। যেখানে একটিতে লেখা ছিল, ‘তোমার আধার কার্ড চাই না, পাথারগাড়ি আমার পরিচয়’।
দুই পক্ষের দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, যে সমালোচনা হিংসার উদ্রেক করে, সরকার বিরোধিতায় মদত দেয় তা রাষ্ট্রদ্রোহিতার নামান্তর। এরপরেই পিটিশনকারীদের এফআইআর খারিজের আবেদন নাকচ করে দেয় ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট।
Comments are closed.