ওষুধ প্রচারের নামে ডাক্তারদের উৎকোচ নয়, নয়া নির্দেশিকা কেন্দ্রের, মানতে হবে UCPMP শর্ত।

ওষুধের প্রচারের নামে চিকিৎসকদের জন্য হোটেলের বন্দোবস্ত করা, বেড়ানোর সুযোগ, উপহার দেওয়া বন্ধ করতে হবে। ওষুধ কোম্পানিগুলিকে সুনির্দিষ্ট বাণিজ্যিক নিয়ম (Uniform Code of Pharmaceutical Marketing Practices, সংক্ষেপে UCPMP) মেনে কনফারেন্স করতে হবে, এমনই কড়া নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্র।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি, Department of Pharmaceuticals (DoP) একটি চিঠিতে সমস্ত ওষুধ সংস্থা ও সংগঠনকে জানিয়েছে, Pharmaceutical কোম্পানিগুলি বাণিজ্যিক নীতির পরোয়া না করে বেআইনিভাবে পণ্যের প্রচার করছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসকদের নিয়ে আয়োজিত কনফারেন্সে তাঁদের জন্য হোটেল বুক করা, বেড়ানোর বন্দোবস্ত করার মতো অনৈতিক অভিযোগ উঠছে ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে। এই প্রেক্ষিতে সমস্ত ওষুধ তৈরির সংস্থা যাতে বাণিজ্যিক নীতি (মেনে ওষুধের প্রচার করে তা সুনিশ্চিত করার জন্য তাঁদের এই নির্দেশিকা দেওয়া হল।

ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ওষুধ প্রচারে যেন Uniform Code of Pharmaceutical Marketing Practices (সংক্ষেপে UCPMP) মেনে চলা হয়। সম্প্রতি কলকাতায় ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (আইপিএ) বার্ষিক সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে DoP ওই চিঠি দিয়ে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে সতর্ক করেছে।

 

UCPMP Guidelines
Picture Courtesy – Twitter

 

২০১৫ সাল থেকে UCPMP guidelines মেনে Pharma কোম্পানিগুলিকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা খাতায়কলমে থেকে যাওয়ার অভিযোগ ভূরি ভূরি। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সাথী (সাপোর্ট ফর অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড ট্রেনিং টু হেলথ ইনিশিয়েটিভ) অভিযোগ করেছে, Pharmaceutical শিল্পসংস্থাগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। তাদের দাবি, ওষুধের প্রচারে ঘুষ দেওয়া, বিদেশ সফরের বন্দোবস্ত করে দেওয়া, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, দামি স্মার্টফোন, গয়না এমনকী মহিলাদের পর্যন্ত উপহার হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। অন্য আর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযোগ, একটি বিখ্যাত সুইস ওষুধ সংস্থা তাদের কনফারেন্সে অংশ নেওয়ার জন্য বিশাল অঙ্কের দক্ষিণা প্রদানের প্রলোভন দেখায়। এমনকী বিদেশ ভ্রমণ, থাকা-খাওয়ারও বন্দোবস্ত করে দেয়। যা ইউসিপিএমপি তো বটেই, ২০০২ সালের ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের পেশাগত আচরণ, শিষ্টাচার নীতিরও বিরুদ্ধাচরণ করে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে ওষুধ সংস্থা, সংগঠনগুলিকে বাণিজ্যিক আইন-বিধি মেনে কাজ করার কড়া নির্দেশিকা দিল কেন্দ্রীয় রাসায়নিক ও সার মন্ত্রকের আওতাধীন Department of Pharmaceuticals। কেন্দ্রের এই নির্দেশিকার তীব্র সমালোচনা করেছে চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। সংগঠনের সদ্য প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি, তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার চিকিৎসকদের কী চোখে দেখে। ২০১৮ সালে লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কুৎসা করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি এমন কথাও বলেছেন, ওষুধ সংস্থাগুলি চিকিৎসকদের মহিলা পর্যন্ত সরবরাহ করে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের মন্তব্য আশা করা যায় না।

Comments are closed.