মাইকে ঐশী ঘোষের বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ তৃণমূল নেতা, ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন

স্থান – জলপাইগুড়ি শহরের সমাজ পাড়া মোড়। উপলক্ষ্য সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ উদযাপন। সময়- সন্ধে সাড়ে ৬ টা। বিরল রাজনৈতিক সৌজন্যের সাক্ষী থাকল উত্তরের জলপাইগুড়ি শহর।

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষ তখন বক্তৃতায় আগুন ঝরাচ্ছেন। একের পর এক চোখা চোখা আক্রমণ ধেয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রের মোদী সরকারের দিকে। বাদ যাচ্ছে না রাজ্যের তৃণমূল সরকারও। ঐশীকে এক ঝলক দেখতে ও তাঁর আগুনে ভাষণ শুনতে সমাজ পাড়া মোড়ে তখন কার্যত তিল ধারণের জায়গা নেই।

অনুষ্ঠানের জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাইক লাগানো হয়েছিল। তেমনই একটি মাইকে ঐশীর বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ হয়ে যান জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি তথা তৃণমূলের কৃষক সংগঠনের জেলা সভাপতি দুলাল দেবনাথ। দিল্লি সীমানায় কৃষক আন্দোলন নিয়ে ঐশী যখন ধারালো আক্রমণ শানাচ্ছেন মোদী সরকারের দিকে, আর চুপ থাকতে পারেননি কৃষক নেতা দুলাল দেবনাথ। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এসএফআই নেত্রীর পরিচয়। দলবল নিয়ে দুলালবাবু সটান রওনা দেন সমাজ পাড়া।

এদিকে বাম ছাত্র সংগঠনের সমাবেশে দলবল নিয়ে তৃণমূল নেতার প্রবেশে হকচকিয়ে যান সকলেই। দুলালবাবু ঐশীর সামনে গিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে তাঁর হাতে তুলে দেন ফুলের তোড়া।

দুলাল দেবনাথ বলেন, জলপাইগুড়ির সংস্কৃতি রাজনৈতিক সৌজন্যের কথা বলে। বিরোধী হলেও ঐশী ঘোষ অত্যন্ত কম বয়সে যে মেজাজে বক্তৃতা করলেন তার প্রশংসা না করে পারলাম না। আশা করব ঐশী এভাবেই এগিয়ে যাবেন। তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি।

এসএফআইয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশ জুড়ে মিটিং মিছিলের আয়োজন হয়েছে। জলপাইগুড়িতে এসএফআইয়ের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষ এবং এসএফআইয়ের প্রাক্তন রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেন রায়। এসএফআইয়ের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির মিছিলের একেবারে সামনের সারিতে ছিলেন ঐশী ঘোষ। ডাফলি বাজিয়ে আজাদি স্লোগানও তোলেন ঐশী। মিছিল শেষে সমাজ পাড়ার সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তিনি। ঐশী জানান, বাংলায় এক দশক বামপন্থীরা ক্ষমতার বাইরে থাকলেও এসএফআইয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে যেভাবে ছাত্র যুবরা পথে নেমেছেন তাতে বুক ভরা আশা নিয়ে দিল্লি ফিরবেন তিনি। জলপাইগুড়ির বিপুল জনসমাগম তাঁকে নতুন করে মানুষের পাশে থাকার অনুপ্রেরণা জোগাবে বলেও জানান জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট।

Comments are closed.