করোনা আবহে তৈরি হওয়া আর্থিক মন্দায় আরও বড়সড় ধাক্কার মুখে সাধারণ মানুষ৷ ফের কমতে চলেছে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার। সূত্রের খবর, পিপিএফ–এ সুদের হার কমে ৭ শতাংশের নীচে নামতে চলেছে, যা গত ৪৬ বছরে সর্বনিম্ন।
সরকারি বন্ড থেকে ধারাবাহিকভাবে আয় কমে আসায় স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে সুদের হার কমিয়ে আনার পথে হাঁটছে মোদী সরকার। এর মধ্যে আগামী ত্রৈমাসিকে সুদের হার নির্ধারণ করার সময়ে ছেঁটে ফেলা হতে পারে পিপিএফ সহ অন্যান্য স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার। যার ফলে প্রবীণ নাগরিক এবং বহু চাকরিজীবী কর বাঁচাতে বা ভবিষ্যতের জন্য যে পিপিএফে টাকা রাখেন, তাঁদের সুদ বাবদ আয়ে টান পড়বে। গত এপ্রিল মাসেই পিপিএফে সুদের হার ৭.৯ শতাংশ থেকে ৭.১ শতাংশে কমিয়ে এনেছিল কেন্দ্র। তাতে এক বছর থেকে পাঁচ বছর মেয়াদের আমানত, পাঁচ বছরের রেকারিং ডিপোজিট, সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম, মাসিক আয় প্রকল্প, এনএসসি, কেভিপি ও সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনায় সুদের হার কমেছে। পিপিএফ অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম অর্থ জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এই মাসের মধ্যে সারা বছরের জন্য অন্তত ৫০০ টাকা এই অ্যাকাউন্টে না ফেললে জরিমানা হতে পারে। এদিকে প্রতি তিন মাস অন্তর স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদের হার ঠিক করা হয়ে থাকে। আগামী সপ্তাহেই নতুন সুদের হার প্রকাশিত হওয়ার কথা। সেখানে যদি সুদের হার কমে, তবে ১৯৭৪ সালের পর আবার পিপিএফে সুদের হার ৭ শতাংশের নীচে নামবে।
করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজার পড়ে যাওয়ায় বিপুল অর্থ খুইয়েছেন লগ্নিকারীরা। এবার পিপিএফ প্রকল্পেও ধাক্কা দিল কেন্দ্রীয় সরকাত। তাহলে এরপর কোথায় টাকা রাখবেন সাধারণ মানুষ, সেই প্রশ্নই উঠছে। আবার অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, পিপিএফে সুদ কমলে অতটাও সমস্যা হবে না। কারণ, গত ছ’মাস ধরে মুদ্রাস্ফীতিও ৮ শতাংশের নীচেই রয়েছে। তাই এই সুদের হারেও বাজার দরের চেয়ে বেশি টাকাই পাবেন গ্রাহকেরা। কিন্তু লকডাউনের কারণে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি গত মে মাসে ছুঁয়েছে ৯.২৮ শতাংশ। তার উপর জ্বালানির দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। তাতে আগামীদিনে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৮ সালে অর্থমন্ত্রকের ন্যাশনাল সেভিংস ইনস্টিটিউটের তত্ত্ববধানে পিপিএফের সূচনা হয়। আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় পিপিএফে সঞ্চয়ের উপর করছাড় পাওয়া যায়। এক বছরে দেড় লক্ষ টাকা সঞ্চয়ের উপর কর মুকুবের সুবিধা পেয়ে থাকেন কোনও বিনিয়োগকারী।
Comments are closed.