৯ বছর বয়সী কোনও বালককে যদি মানচিত্র খুলে বলা হয় মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো কোথায়, বেশিরভাগই হয়তো বলতে পারবে না। অথচ এই বয়সী পুণের অদ্বৈত ভারতীয়া জয় করে ফেললেন আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো।
গত ৩১ শে জুলাই পর্বাতোরহী সমীর পথামের নেতৃত্বে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯ হাজার ৩৪১ ফুট উচ্চতার মাউন্ট কিলিমাঞ্জারোর শিখরে পৌঁছল ৯ বছরের খুদে অদ্বৈত।
পাহাড় অদ্বৈতকে বরাবরই টানে। আর দুঃসাহসিক অভিযানও নেশা এই ৮ বছরের বালকের। ২০১৬ সালে, মাত্র ৬ বছর বয়সেই মাউন্ট এভারেস্টে ও ঠার চেষ্টা করেছিল অদ্বৈত। এবার পূর্ব আফ্রিকার দেশ তাঞ্জানিয়ার উত্তর প্রান্তে অবস্থিত সবচেয়ে উঁচু পর্বত কিলিমাঞ্জারো জয় করে ফেলল ৯ বছরের অদ্বৈত ভারতীয়া। অদ্বৈতর কথায়, এই অভিযান যেমন দুরূহ, তেমনই মজার ছিল তাঁর অভিজ্ঞতা। মাইনাস ২১ থেকে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা, আর প্রায় ফুরিয়ে যাওয়া অক্সিজেন সিলিন্ডার বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিল তাকে। তবে প্রতি মুহূর্তেই এই চ্যালেঞ্জ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছে ৮ বছরের বালক। কিলিমাঞ্জারো অভিযানে অদ্বৈতের উপরি পাওনা ছিল এর অপরূপ সৌন্দর্য। তার কথায়, এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে কাঠের বাড়িতে থাকতে হত। তবে কিলিমাঞ্জারো অভিযানে তার কাছে সবচেয়ে মজার ছিল বরফ ঘেরা পর্বতের মাঝখানে তাঁবু খাটিয়ে থাকার অভিজ্ঞতা। অদ্বৈতর কথায়, চাইলে আরও তাড়াতাড়ি এই অভিযান শেষ করে ফেলা যেত, কিন্তু কিলিমাঞ্জারোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে কিছুটা যাওয়ার পরপরই বিশ্রাম নিত সে।
‘অ্যাডভেঞ্চার পালস’ নামে পুণের একটি ট্রেকিং সংস্থার উদ্যোগে কিলিমাঞ্জারো অভিযানে অংশ নেয় পুনের ‘ছোট্ট সিম্বা’ বলে পরিচিত অদ্বৈত ভারতীয়া ও তাঁর মা পায়েল ভারতীয়া। শারীরিক কারণে পায়েল অভিযানের মাঝপথ থেকে ফিরে গেলেও, ছেলে অদ্বৈতের ছিল নাছোড় মনোভাব। শেষ পর্যন্ত ৭ দিনে এই অভিযান শেষ করে সে।
অদ্বৈতের মা জানান, কিলিমাঞ্জারো অভিযানের জন্য ২ মাস ট্রেনিং করেছে ছেলে। তাছাড়া প্রতিদিন ১ ঘন্টা করে সাঁতার আর ফুটবল খেলে অদ্বৈত ভারতীয়া। ক্রিকেট, টেনিসেও সমান আগ্রহী সে। ৯ বছরের বালক অদ্বৈত ভারতীয়ার পরবর্তী অভিযানের লক্ষ্য ইউরোপের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস।
Comments are closed.