২০১৯ সালের লোকসভায় নরেন্দ্র মোদীর দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠতে পারেন তিন মহিলা। সংবাদসংস্থা রয়টার্স-এর এক সমীক্ষায় প্রকাশ, মোদীর দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রিত্বের পথে বড় বাধা হতে পারেন দেশের তিন মহিলা নেত্রী, কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, তৃণমূল কংগ্রেসের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিএসপি প্রধান মায়াবতী।
‘থ্রি উইমেন হু কুড বি মোদীজ বিগেস্ট নাইটমেয়ার ইন ইন্ডিয়াজ ইলেকশন’ শীর্ষক শিরোনামে রয়টার্স-এ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ভারতের তিন শক্তিশালী মহিলা নেত্রী, যাঁরা সমাজের আলাদা-আলাদা অংশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাঁরা মোদীর দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা হতে পারেন।
রয়টার্স-এ প্রকাশিত খবরে লেখা হয়েছে, সদ্য প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে প্রবেশ করা ৪৭ বছরের প্রিয়াঙ্কা গান্ধীই কংগ্রেসের তুরুপের তাস হতে পারেন। প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে নতুন মুখ হলেও, দীর্ঘদিন ধরেই মা সোনিয়া গান্ধী ও ভাই রাহুলকে রাজনৈতিক প্রচারে সাহায্য করে এসেছেন প্রিয়াঙ্কা। তাছাড়া, নেহরু-গান্ধী পরিবারের মেয়ে প্রিয়াঙ্কাকে দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উত্তর প্রদেশের স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের কথায়, আগামী লোকসভায় রাজ্যের উচ্চবর্ণীয়দের ভোটের একটা বড় অংশ এনে দিতে পারেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তাঁদের ব্যাখ্যা, উত্তর প্রদেশে উচ্চবর্ণীয়রা এখনও দেশের পুরনো দলের প্রতি অধিক আস্থাশীল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে ‘পশ্চিমবঙ্গের ফায়ারব্রান্ড চিফ মিনিস্টার’ উল্লেখ করে রয়টার্স-এ লেখা হয়েছে, দু’বারের রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৯৭ সালে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান করে ২০১১ সালে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তাঁর জনপ্রিয়তা ও প্রাসঙ্গিকতা অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে তাঁর ডাকে সারা দেশের প্রথম সারির রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা ১৯ শে জানুয়ারি ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া র্যালি’তে হাজির হয়েছিলেন। পাশাপাশি, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মোদী বিরোধী জোটে বড় ভূমিকা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বিজেপি বিরোধী ভোট টানতে বিশেষ সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর পাশাপাশি, রয়টার্স-এ লেখা হয়েছে, উত্তর প্রদেশের দলিত নেত্রী মায়াবতীর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও সংখ্যালঘু ভোটারদের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিছুদিন আগেই বৈরিতা ভুলে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট গড়েছে তাঁর দল। জোট গড়ার পরে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের রাতের ঘুম উড়িয়ে দেবে তাঁদের জোট। তাঁর এই বক্তব্য অমূলক বলে মনে করছে না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে ক্ষমতা হারিয়ে ইতিমধ্যেই কোণঠাসা পদ্ম শিবির। উত্তর প্রদেশে দুই বিরোধী দলের নেত্রী (প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মায়াবতী) বিজেপির মাথাব্যথা আরও বাড়ালো বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স-এর মতে, প্রিয়াঙ্কা, মমতা এবং মায়াবতী তিনজন সমাজের ভিন্ন-ভিন্ন অংশের মানুষের কাছে জনপ্রিয়। তাঁরা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠতে পারেন মোদীর কাছে।
Comments are closed.