শিল্পীরা এক হোক, সুযোগ পাক, চাইছেন ‘চার কন্যা’; তাঁদের সৃষ্টি ‘হৃদমাঝারে’ নিয়ে কথা বললেন TheBengalStory-এর সঙ্গে
সেই ১৯৮৪-৮৫ সালের কথা। নাচের স্কুলে গিয়ে প্রথম পরিচয় চার বন্ধুর। সময়ের নিয়ম মেনে প্রত্যেকেই এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছটিয়ে গিয়েছেন। চার বন্ধুর একজন নাচকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। বাকিদের কেউ বর্তমানে ‘এইচ আর প্রফেশনাল’, কেউ ইঞ্জিনিয়ার। অন্য আর একজন মনের চিকিৎসা করে থাকেন। পথ পৃথক হলেও, নাচের প্রতি বলা ভালো শিল্পের প্রতি ভালোবাসা তাঁদের এখনও একসঙ্গে রেখেছে। ইন্দ্রানী পাল, নীলাঞ্জনা ব্যানার্জী, পূর্বিতা মুখার্জি, রিখিয়া বসু, নাচকে কেন্দ্র করেই এত বছর পরেও তাঁদের বন্ধুত্ব একই ভাবে রয়ে গিয়েছে। আর নিজেদের এই ভালোলাগা, ভালোবাসাকে একটি উদ্দেশ্য দিতে চাইছেন চার বন্ধু। সেখানে থেকেই ২০১৯ থেকে পরিকল্পনা শুরু হৃদমাঝারের। যার মুখ্য উদ্দেশ্য, বিভিন্ন ক্ষেত্রের শিল্পীদের এক ছাতার তলায় আনা। একটি মঞ্চ তৈরি করা যেখান প্রত্যেক শিল্পী তাঁদের নিজেদের সৃষ্টি তুলে ধরতে পারবেন। হৃদমাঝারে এবং তাদের প্রথম প্রয়াস নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বললেন রিখিয়া বসু।
রিখিয়া জানান, খাতায় কলমে হৃদমাঝারের পথ চলা শুরু ২০২২-এর মার্চ মাস থেকে। দীর্ঘদিন নাচের জগতে রয়েছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি বলেন, “দেখুন, শিল্পের নানান ক্ষেত্রে অসংখ্য প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু এই জায়গায় একটা ঠিক ঠাক সুযোগ পাওয়া খুব কঠিন। আর এখান থেকে আমাদের হৃদমাঝারে নিয়ে ভাবনা শুরু। আমরা চাইছি একটা মঞ্চ তৈরী করতে, যেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের শিল্পীরা তাঁদের কাজ তুলে ধরতে পারবেন।” কিছুটা হেসে বললেন, ‘’শুধু নাচ নয় কিন্তু। যে কোনও ক্ষেত্রের হতে পারে। কেউ হয়তো ভালো অভিনয় করতে পারেন বা ছবি তুলতে পারেন বা হয়তো ভালো আঁকিয়ে। আমরা চাই যাঁরা নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারেন, তাঁরা প্রত্যেকে একসঙ্গে, একটি ছাদের তলায় আসুক।”
হৃদমাঝারের প্রথম অনুষ্ঠান ‘সম্বোধি আলোক’। এটি মূলত আলো নিয়ে একটি কর্মশালা। ‘চার কন্যা’র কথায়, নাচ হোক বা নাটক। মঞ্চের যে কোনও অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেই আলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি সঠিক উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আলোর ভূমিকা কী, মঞ্চে কীভাবে আলো’কে ব্যবহার করতে হয়, ইত্যাদি বিবিধ বিষয় নিয়েও ওই ওয়ার্কসপে আলোচনা হবে। আগামী রবিবার, ৭ আগস্ট, দক্ষিণ কলকাতার হাজরার সুজাতা সদনে দুপুর ১টা থেকে ৪টে পর্যন্ত এটি হবে। ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের জন্য 9836395540 এই নাম্বারে অথবা [email protected] ওয়েবসাইটে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। ওয়ার্কশপটা করাবেন উত্তীয় জানা। যিনি পঞ্চম বৈদিক সহ একাধিক প্রথম সারির নাটকের দলের সঙ্গে কাজ করেছেন। নিজের কাজের জন্য ২০১১ সালে জি বাংলা অনুষ্ঠিত গৌরব সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন।
কথায় কথায় আরও জানা গেল, ভবিষৎ-এ হৃদমাঝারে নিয়ে ইন্দ্রানী, রিখিয়া, নীলাঞ্জনা, পূর্বিতাদের একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে। নানান বিষয়ে ওয়ার্কশপ, আলোচনা সভা, ইত্যাদি নানান উদ্যোগের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রের শিল্পীদের একত্রিত করতে চাইছেন তাঁরা। এর পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্যও কাজ করতে চায় চারবন্ধু। সেই লক্ষ্য নিয়েও তাঁরা ইতিমধ্যেই ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন। শুধু শিল্পীই নয়, শিল্প ভালোবাসেন এমন যে কোনও মানুষই আমাদের সঙ্গে এসে সামিল হলে, মনে করব আমাদের চেষ্টা সার্থক, বলছে হৃদমাঝারে।
Comments are closed.