মানুষের আয়ের থেকেও ধনীদের সম্পদ জমা হচ্ছে অনেক বেশি হারে, ভারতে আর্থিক বৈষম্য ছুঁয়েছে প্রাক স্বাধীনতা আমলকে: ইকনমিক টাইমস
সম্প্রতি সিপিএমের মুখপত্র পিপলস ডেমোক্রেসির এক প্রতিবেদনে মার্ক্সবাদী অর্থনীতিবিদ প্রভাত পট্টনায়ক দেখিয়েছিলেন, কীভাবে বর্তমান ভারতে বৈষম্য বাড়তে বাড়তে তা ছাপিয়ে গিয়েছে রাজ আমলের বৈষম্যের স্তর। অক্সফাম তার রিপোর্টে জানিয়েছে, দেশের মোট সম্পদের সিংহভাগ গুটিকয় পরিবারের হস্তগত।
এবার দেশের সম্পদ ও আয়ের অনুপাত প্রাক স্বাধীনতা আমলের অনুপাতের সমান হয়ে উঠেছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হল ইংরেজি দৈনিক দ্য ইকনমিক টাইমসে।
একদিকে সরকারের দাবি, দুর্বার গতিতে সুপার পাওয়ার হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে ভারত। অন্যদিকে, বেকারত্ব ছুঁয়েছে সর্বকালীন রেকর্ড। এই পরিস্থিতিতে দেশের সম্পদ ও আয়ের অনুপাত নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশিত হল ইংরেজি দৈনিক দ্য ইকনমিক টাইমসে। প্রাক স্বাধীনতা আমলে যে হারে ধনীরা আরও বেশি করে ধনী হয়ে উঠছিলেন, ২০১৯ সালের হার ছুঁয়ে ফেলেছে সেই হারকে। নয়ের দশকের শুরুতে উদারীকরণের পর কেটে গিয়েছে প্রায় তিন দশক। দ্য ইকনমিক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, এই সময়ের মধ্যে ধনীদের সম্পদ লাফিয়ে বেড়েছে, যে গতি ভারতের ইতিহাসে সর্বকালের দ্রুততম। এই তিন দশকের কাছাকাছি সময়ে মানুষের উপার্জন বেড়েছে বটে, কিন্তু সম্পদশালীরা ফুলেফেঁপে উঠেছেন তার চেয়েও দ্রুত গতিতে। প্রতিবেদনে প্রকাশ, জাতীয় সম্পদ ও আয়ের অনুপাত পৌঁছে গিয়েছে প্রাক স্বাধীনতা স্তরে, যা ছিল ৬০০-৭০০ শতাংশ। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক ঋষভ কুমারের তৈরি করা গবেষণাপত্র থেকে এই তথ্য গ্রহণ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে।
প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, শেষ ২০ বছরে জাতীয় আয়ের তুলনায় জাতীয় সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ বিশাল পরিমাণে বেড়েছে। ২০১২ সাল নাগাদ সম্পদ ছিল আয়ের ৫৫০-৬০০ শতাংশ (৬ বছর)। উনিশ শতকের শেষে যা ছিল ৩৫০-৪০০ শতাংশ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই প্রবণতা কেবল ভারতে সীমাবদ্ধ নয়। বরং অর্থনৈতিক বৃদ্ধির তুলনায় সম্পদ বৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পেয়েছে একাধিক প্রথম বিশ্বের দেশে। এই তালিকায় রয়েছে চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলো, জাপান এবং রাশিয়া।
Comments are closed.