উত্তর প্রদেশে সৈনিক স্কুল খুলছে আরএসএস, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা সরাসরি যোগ দিতে পারবে সেনাবাহিনীতে

আরএসএস শিবিরে অস্ত্র প্রশিক্ষণের রেওয়াজ বহুদিনের। এবার পুরোদস্তুর সৈনিক স্কুল খুলতে চলেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি। তাদের দাবি, এই স্কুল থেকে পাশ করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পড়ুয়ারা সরাসরি যোগ দিতে পারবে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে।

এতদিন পর্যন্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এই কাজের দায়িত্বে ছিল। মন্ত্রক অনুমোদিত সৈনিক স্কুল সোসাইটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় অন্তত ২৫ টি সৈনিক স্কুল চালায়। ছয়ের দশকে ভারতে প্রথম সৈনিক স্কুল তৈরির পরিকল্পনা ছিল প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভি কে কৃষ্ণ মেননের। সেনাবাহিনীতে সমস্ত শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব বজায় রাখতে তিনি দেশজুড়ে এই ধরণের স্কুল খোলার পরিকল্পনা করেছিলেন। সৈনিক স্কুলগুলো থেকে পাশ করে পড়ুয়ারা সাধারণত ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি এবং ইন্ডিয়ান নাভ্যাল অ্যাকাডেমিতে যোগ দেয়। কিন্তু ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে দেশে পুরোদমে কাজ শুরু করে দেবে বেসরকারি সৈনিক স্কুলও। বেসরকারি সৈনিক স্কুল চালাবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের শিক্ষা শাখা বিদ্যা ভারতী। স্কুলের নাম হবে আরএসএসের প্রথম অব্রাহ্মণ তথা প্রথম মহারাষ্ট্রের বাইরে থেকে সরসঙ্ঘচালক হওয়া রাজেন্দ্র সিংহ ওরফে রাজু ভাইয়ের নামে। উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহরের শিকারপুর থেকে আরএসএসের সৈনিক স্কুলের যাত্রা শুরু হবে। প্রাক্তন আরএসএস প্রধান রাজু ভাই এই শিকারপুরেরই বাসিন্দা ছিলেন।

আরএসএসের সৈনিক স্কুলটি আবাসিক। সূত্রের খবর, শিকারপুর এলাকায় স্কুল ভবন নির্মাণের কাজ জোরকদমে চলছে। কেবলমাত্র ছাত্রদের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি অবধি পড়ানো হবে সিবিএসই সিলেবাস অনুযায়ী।

পশ্চিম উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত আরএসএসের বিদ্যাভারতী উচ্চ শিক্ষা সংস্থানের আহ্বায়ক অজয় গোয়েল দ্য ইকনমিক টাইমসকে জানিয়েছেন, দেশে এই ধরণের পরীক্ষা আমরাই প্রথম করছি। সফল হলে পরবর্তীতে এই মডেল ছড়িয়ে দেওয়া হবে দেশের অন্যত্র। আরএসএসের বিদ্যাভারতী এই মুহূর্তে সারা দেশে প্রায় ২০ হাজার স্কুল চালায়।

সূত্রের খবর, অগাস্ট থেকেই শুরু হয়ে যাবে আরএসএসের সৈনিক স্কুলে ছাত্র নিয়োগ। প্রথম ব্যাচে নেওয়া হবে ১৬০ জন ছাত্র। তার মধ্যে ৫৬ টি আসন সংরক্ষিত থাকবে যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত সেনা জওয়ানদের পুত্রদের জন্য।

আরএসএসের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছেন উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। তাঁর দাবি, রাজ্যে এই মুহূর্তে ৩ টি সৈনিক স্কুল চলছে। তার মধ্যে লখনউ সৈনিক স্কুলের ভার বহন করে রাজ্য সরকার। নতুন করে বেসরকারি সৈনিক স্কুলের কী প্রয়োজন? অখিলেশের অভিযোগ, আরএসএস নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে।

Comments are closed.