অসহিষ্ণুতা, গণপিটুনি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা বিদ্বজ্জনরা ‘দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজের সুবিধাভোগী’, ৪৯ জনকে আক্রমণ করে প্রতিবেদন আরএসএসের মুখপত্রে
জয় শ্রীরাম স্লোগান, অসহিষ্ণুতা, গণপিটুনি সহ একাধিক ইস্যুতে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৪৯ জন বিশিষ্ট মানুষ খোলা চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। সেই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই শুরু যায় এই বিদ্বজ্জনদের সমালোচনা এবং ট্রোলিংয়ের পালা। বেছে বেছে কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রীকে পাল্ট খোলা চিঠি দেন কঙ্গনা রানাওয়াত, মধুর ভাণ্ডারকর সহ ৬২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। এই বিতর্কে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা বিদ্বজ্জনদের এবার সমালোচনা করল আরএসএস।
অপর্ণা সেন, আদুর গোপালকৃষ্ণন, রামচন্দ্র গুহ, অনুরাগ কাশ্যপ, সুমিত সরকারদের লেখা খোলা চিঠির ইস্যুতে তাঁদের আক্রমণ করে সম্পাদকীয় প্রকাশিত হল আরএসএসের মুখপত্র অর্গানাইজারে।
গত ২৯ শে জুলাই অর্গানাইজারে প্রকাশিত ‘Open Letter from Closed Minds’ শীর্ষক সম্পাদকীয়তে খোলা চিঠি পাঠানো ব্যক্তিত্বদের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজের সুবিধাভোগী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সমালোচনা করা হয়েছে বিদ্বজ্জনরা বেছে বেছে কয়েকটি ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে।
অর্গানাইজারের সম্পাদকীয়তে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যখন দেশ উন্নতির শিখরে যাত্রা করছে, বিদ্বজ্জনরা কেন সেই সময়কেই বেছে নিলেন সরকার বিরোধিতার জন্য। তাহলে কি মিশন শক্তি কিংবা চাঁদ অভিযানের সাফল্যে আসলে তাঁরা দুশ্চিন্তায় ভুগছেন?
সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, বিদ্বজ্জনরা জয় শ্রীরাম স্লোগানকে উসকানিমূলক মনে করলেন, অথচ আল্লা-হু-আকবর নিয়ে কিচ্ছুটি বললেন না। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে গণপিটুনির বেশিরভাগ ঘটনাই মিথ্যে। বিদ্বজ্জনদের তালিকায় বাংলা এবং কেরলের মানুষ কেন বেশি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আরএসএসের মুখপত্র। লেখা হয়েছে, এই জন্যই বাংলা ও কেরলে কোনও গণপিটুনি বা রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ঘটনার উল্লেখ চিঠিতে নেই। পাশাপাশি বাংলা থেকে চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা থেকে আর্থিকভাবে উপকৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে অর্গানাইজারের সম্পাদকীয়তে। লেখা হয়েছে, আর তাই দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজের এই সুবিধাভোগীরা এই সময় বেছে নিয়ে মোদীর বিরোধিতা আরম্ভ করেছেন।
পাশাপাশি হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে আসন্ন বিধানসভা ভোটের জন্যই বিদ্বজ্জনরা এভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছেন বলে লেখা হয়েছে। ৪৯ জন বিশিষ্ট মানুষ খোলা চিঠির মাধ্যমে যে ঘটনাবলীর অবতারণা করেছেন, তা চূড়ান্ত পর্যায়ের একচোখামিতে ভর্তি এবং এই চিঠির বিষয়বস্তু বিশ্বের নজরে ভারতের মর্যাদা খাটো করছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে। এই চিঠির পর গণপিটুনি কিংবা সম্প্রদায়ভিত্তিক ঘৃণার রাজনীতি বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে আরএসএসের মুখপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে।
Comments are closed.