অবিশ্বাস্য: সল্টলেকে যুবককে খুন করে মৃতদেহ তন্ত্রমতে পোড়ানো হয়েছিল! প্রাথমিক তদন্তে ধারণা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের

সল্টলেকের এ জে ব্লক কঙ্কালকাণ্ডে  চাঞ্চল্যকর মোড়। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, বাড়ির বড় ছেলে অর্জুন মহেশ্বরীকে খুন করা হয় তন্ত্রসাধনার জেরেই। তন্ত্রমতেই তাঁর দেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়। বিধাননগরের ওই বাড়ির পিছন থেকে পোড়া কাঠ ও ভস্মের নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, প্রথমে চেয়ারে বসিয়ে এবং পরে মাটিতে শুইয়ে দিয়ে মহেশ্বরী পরিবাররে বড় ছেলের দেহ পোড়ানো হয়। ঘি, কর্পূর, কাঠ প্রভৃতি ব্যবহার হয় দেহ পোড়ানোর জন্য।
সল্টলেক কঙ্কালকাণ্ডের তদন্তে নেমে বিধাননগর পূর্ব থানা ও বিধাননগর গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার ওই বাড়িতে যায়। ঘটনার পুননির্মাণের জন্য পুলিশের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় ধৃত মৃতের মা ও ভাইকে। এই প্রেক্ষিতে পুলিশ জানাচ্ছে, গত ১২ অগাস্ট রাত দেড়টা নাগাদ অর্জুনের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করা হয়। তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়লে ঘরের ভেতরেই তাঁকে পোড়ানো হয়। এরপর কঙ্কাল রাখা হয় বাড়ির ছাদে। পুলিশ সূত্রে দাবি, কীভাবে মারা হয়েছিল অসুস্থ বড় ছেলেকে। কীভাবে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল দেহে। তারপর পোড়া মৃতদেহ কীভাবে ছাদে নিয়ে যাওয়া হয়, এ সবই পুনর্নিমাণের সময় দেখিয়েছেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত তদন্তের যা গতিপ্রকৃতি, তাতে তন্ত্রসাধনার জেরে খুনের তত্ত্বই জোরদার হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর মৃতের বাবা অরুণ মাহেশ্বরীর অভিযোগের ভিত্তিতে সল্টলেকের এ জে ব্লকের ২২৬ নম্বর বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার হয় একটি পোড়া কঙ্কাল। পরে জানা যায়, সেটি ওই বাড়ির বড় ছেলে অর্জুনের। জানা যায়, বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে বাবা অরুণ থাকেন অন্যত্র। আর সল্টলেকের ওই বাড়িতে দুই ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন অরুণবাবুর স্ত্রী গীতা। অনেক দিন ধরে বড় ছেলের খোঁজ না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবা অরুণ মহেশ্বরী। তারপরেই পুলিশ গীতা দেবীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি কঙ্কাল উদ্ধার করে। এই ঘটনায়  ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন মৃতের মা ও ছোট ভাই বিদূর।
কিন্ত এই খুনের মোটিভ কী?তার তদন্তে নেমে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে। বাড়ি থেকে ত্রিশূল ও বেশ কিছু তন্ত্রসাধনার সরঞ্জাম উদ্ধার হওয়ায় পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ হয় তন্ত্র সাধনার জেরেই খুন হতে হয় বাড়ির বড়ো ছেলেকে। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও পুলিশ জানতে পারে ওই বাড়িতে নিয়মিত পুজো-আর্চা, যজ্ঞ ইত্যাদি হত।

Comments are closed.