সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালে সারদা চিটফান্ড মামলায় তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। মোট ৩৯৩টি অভিযোগ সিবিআই-এর কাছে এসেছিল। সেখান থেকে বাছাই করে ৭৮ টি অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চালানো হয়েছে। পেশ করা হয় কয়েকটি চার্জশিটও। সিবিআই সূত্রে খবর, সারদার তদন্ত এবার শেষ পর্যায়ে। চূড়ান্ত চার্জশিটের খসড়া পাঠানো হয়েছে দিল্লির সদর দফতরে। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিত এই তদন্তে মোট ২০ জন ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের অনুমতি চেয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। সেই অনুমোদন এলেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হবে অথবা শুরু হবে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব।
সিবিআই সূত্রে খবর, শুধু সারদা মামলা নয়, ২০২০ সালের মধ্যে বেআইনি অর্থলগ্নি সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা গুটিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু করেছে তারা। সারদা ছাড়া রোজভ্যালি, প্রয়াগ, আইকোর, টাওয়ারের মতো সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রায় শেষের পথে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের হাতে থাকা আরও ৮২টি মামলার তদন্ত একযোগে শুরু হচ্ছে। চলতি বছরের শেষে সেগুলির চার্জশিট জমা পড়তে পারে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। সিবিআই-এর এক কর্তার কথায়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন লগ্নিসংস্থার আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে যে তদন্ত চলছে, তা শেষ করার বিশেষ তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরকম মোট ৮২টি নতুন মামলার তদন্ত শেষ করলে সিবিআইয়ের হাতে বেআইনি লগ্নি সংক্রান্ত আর কোনও মামলা থাকবে না। যে সব মামলা বকেয়া আছে তাতে ছোট ছোট সংস্থা জড়িত। তার তদন্ত দ্রুত শেষ হয়ে যাবে।
সিআইডি ২০১৪ সালের ৯ মে ৫৭৮টি লগ্নি সংস্থার নয়ছয় সংক্রান্ত অভিযোগ সিবিআইকে দিয়েছিল। সূত্রের খবর, সারদা ছাড়া সেই ৫৭৮টি মামলার মধ্যে ১৬৩টি অভিযোগের তদন্ত এখনও শেষ করতে পারেনি সিবিআই। তার মধ্যে থেকে বাছাই করা ১০২টি অভিযোগ এফআইআর করার জন্য দিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতরে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন সিবিআই-এর কলকাতার যুগ্ম অধিকর্তা পঙ্কজ শ্রীবাস্তব। সেই অনুমোদন এসেছে বলে খবর। তবে এই ১০২টি মামলার মধ্যে ২০টিতে স্থানীয় থানা ইতিমধ্যেই চার্জশিট পেশ করেছে। সেগুলি বাদ দিয়ে বাকি ৮২টি মামলা এ বছর শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিআই। এই মামলাগুলি মূলত ছোট লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে, যারা ১৫০ থেকে ২০০ কোটি টাকা তুলেছিল। বড় সংস্থাগুলির তদন্ত অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকার সিবিআই তদন্তে ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহার করে নেওয়ায়, কলকাতার দুর্নীতি দমন শাখা এবং আর্থিক অপরাধ দমন শাখার হাতে কোনও কাজ নেই। বকেয়া এফআইআরগুলির অর্ধেক কাজ ওই দু’টি শাখার হাতে তুলে দেওয়া হবে। বাকি কাজ করবে লগ্নি-তদন্তে বিশেষ ভাবে গঠিত চার নম্বর আর্থিক অপরাধ দমন শাখা।
Comments are closed.