Assam NRC: স্কুল সার্টিফিকেট নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, জানাল গুয়াহাটি হাইকোর্ট! থাকতে হবে প্রধান শিক্ষকের সাক্ষ্য
প্রধান শিক্ষকের সাক্ষ্য ছাড়া স্কুল সার্টিফিকেট নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, এনআরসিতে নাম না ওঠা মহিলার আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্তব্য গুয়াহাটি হাইকোর্টের।
অসমের এনআরসিতে নাম না ওঠা বছর বিয়াল্লিশের সাহেরা খাতুন কামরূপ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেখানে তাঁর নাগরিকত্বের আবেদন খারিজ হওয়ার পর গুয়াহাটি হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন তিনি। সাহেরা ২৪ মার্চ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে অসমে আসার প্রমাণ হিসেবে মোট ১২ টি ডকুমেন্ট পেশ করেন আদালতে। যার মধ্যে একটি হল অসমের কাথারার ওমকার সরকার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সই করা শংসাপত্র। সেখানে সাহেরার জন্মতারিখ দেওয়া রয়েছে ১৯৭৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, বাবার নাম সায়েদ আলি। তাছাড়াও ১৯৬৬, ১৯৭০, ১৯৭৭, ১৯৮৯, ১৯৯৭, ২০০৫ এবং ২০১৭ সালের ভোটার লিস্টে তাঁর নিজের নাম, বাবা-মা, ঠাকুরদা ও ভাই-বোনের নামের তালিকাও দেন সাহেরা। ভোটার তালিকায় নাম থাকা মফিদুল ইসলাম ও জাইতুন নিসা তাঁর ভাই ও মা হিসেবে মৌখিক সাক্ষ্য দেন আদালতে। এই প্রসঙ্গে গুয়াহাটি হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, পিটিশনার ও তাঁর দাবি মতো বাবা-মা ও পূর্বপুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের সাক্ষ্য রয়েছে স্কুলের শংসাপত্র ও গ্রামের প্রধানের সই করা কিছু কাগজে। বিচারপতি মনোজিত ভুঁইয়া ও বিচারপতি পার্থজ্যোতি সাইকিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, স্কুলের শংসাপত্র কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রমাণ থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট মামলায় প্রধান শিক্ষকের সাক্ষ্য ছাড়া এই শংসাপত্র গ্রহণীয় নয়। পাশাপাশি, বৈধ কাগজপত্রের প্রমাণ ছাড়া শুধুমাত্র মৌখিক সাক্ষ্য দিয়ে আবেদনকারীর সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের সম্পর্ক প্রমাণ হচ্ছে না বলেও জানানো হয়। তা ছাড়া মা হিসেবে যাঁকে দেখানো হয়েছে তাঁকেও ক্রস এগজামিনেশন করা হয়নি বলে জানায় আদালত। বিচারপতি ভুঁইয়া ও বিচারপতি সাইকিয়ার বেঞ্চ জানায়, মৌখিক সাক্ষ্য দিয়ে একজনের নাগরিকত্ব প্রমাণ হয় না। ফরেনার্স অ্যাক্টের নবম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, পিটিশনার তাঁর নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারেনি জানিয়ে এই রিট পিটিশন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি অসমে এনআরসিতে নাম না ওঠা জাবেদা বেগম নামে এক মহিলার মামলায় গুয়াহাটি হাইকোর্ট জানিয়েছিল, জমির খাজনা প্রদানের রসিদ, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্কের কাগজ থেকে ভোটার কার্ড, কোনওকিছুই নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। এদিকে ১১ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ের একটি আদালত ঘোষণা করে, সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রই নাগরিকত্বের প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। এ বার প্রধান শিক্ষকের সাক্ষ্য ছাড়া স্কুলের শংসাপত্রও নাগরিকত্বের প্রমাণ নয় বলে জানিয়ে দিল গুয়াহাটি হাইকোর্ট।
Comments are closed.