সৌরভের বিসিসিআই সভাপতি হওয়া কি ভবিষ্যতে রাজনীতিতে পা রাখার ইঙ্গিত? প্রতিবেদন ফরাসি সংবাদসংস্থা এএফপি’র
মহানাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে তাঁর বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই সৌরভের রাজনৈতিক যোগ নিয়ে গুঞ্জন দানা বেধেছে। সেই গুঞ্জনে ঘৃতাহুতি দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর বৈঠক। বিজেপির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে কি কোনও সমীকরণ তৈরি হচ্ছে, সৌরভ গাঙ্গুলি কি পুরোদস্তুর রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়তে চলেছেন, এই প্রশ্নেই যখন তোলপাড় আসমুদ্রহিমাচল, তখনই সেই জল্পনায় নতুন মাত্রা যোগ করল আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা এএফপি।
যদিও এই জল্পনায় জল ঢেলেছিলেন সৌরভ নিজেই। জানিয়েছিলেন, রাজনীতি তাঁর খেলার মাঠ নয়। এই জল্পনায় নয়া মাত্রা যোগ করে অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, সৌরভ বিজেপিতে যোগ দিতে চাইলে স্বাগত।
এই প্রেক্ষাপটে বুধবার মুম্বইয়ের ক্রিকেট সেন্টারে বিসিসিসিআই প্রেসিডেন্টের চেয়ারে আনুষ্ঠানিকভাবে বসেছেন সৌরভ। এই প্রেক্ষিতে এবার এই গুঞ্জন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করল আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা এএফপি। দীর্ঘ সেই প্রতিবেদনে রয়েছে সৌরভের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট পদে বসে আসলে সৌরভ গাঙ্গুলি জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশের দিকে আরও এক কদম এগিয়ে গেলেন। কেন একথা বলছে প্রতিবেদন? তারও ব্যাখ্যা দিয়েছে বিশ্বের প্রাচীনতম সংবাদসংস্থা এএফপি।
ফরাসি সংবাদসংস্থায় বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌরভ গাঙ্গুলির ইউএসপি হল তাঁর আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা এবং পরিচ্ছন্ন ইমেজ। যে কোনও রাজনৈতিক দলই তা ব্যবহার করতে এক পায়ে রাজি। বিশেষ করে সৌরভের রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটে তাঁকে কেন্দ্র করেই রাজনীতি আবর্তিত হয় কিনা, সেটাই এখন প্রশ্ন।
ইংরেজি নিউজ চ্যানেল এনডিটিভিকে সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় ঝা বলেছেন, বর্তমান বিসিসিআইয়ে বিজেপি যোগ দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। পদাধিকারীরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনওভাবে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। এই প্যানেলের প্রধান হিসেবে সৌরভের কাজ করা তাই তাঁর বিজেপি-যোগের জল্পনাই উসকে দিচ্ছে। যদিও সৌরভ নিজে তা মানতে নারাজ। অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা কোনও রাজনীতির কথা আলোচনা করেননি। একথা দু’জনই বারবার জানিয়েছেন, ট্যুইট করেছেন। কিন্তু বন্ধ দরজার ওপারে অমিত শাহ-সৌরভ গাঙ্গুলি ঠিক কী আলোচনা হয়েছে, তা এখনও অজানা, ফলে জল্পনায় দাঁড়ি পড়ছে না।
প্রতিবেদনটি লেখার সময় ফ্রান্সের এএফপি কথা বলেছিল দ্য হিন্দুর রাজনৈতিক সম্পাদক নিস্তুলা হেব্বারের সঙ্গে। তাঁর মতে, সৌরভ রাজি থাকলে, বাংলায় তিনিই বিজেপির সেরা বাজি হতে চলেছেন। হেব্বার বলছেন, সৌরভ গাঙ্গুলি বাংলায় তুমুল জনপ্রিয়, আইকন সৌরভকে এতদিন রাজনীতির ঊর্ধ্বে দেখতেই অভ্যস্ত ছিল বাঙালি। কিন্তু অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক কি বড় আসরে দাদার অন্তর্ভুক্তির প্রাথমিক ধাপ, এই প্রশ্নই এখন বাংলার জনমানসে। বিশেষ করে সৌরভের বিসিসিআই সভাপতি হওয়ার পর রাজ্য বিজেপি নেতারা যেভাবে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, তা এই জল্পনাকেই জোরালো করেছে।
Comments are closed.