রোজ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। দোসর হয়েছে রান্নার গ্যাস। নাজেহাল মধ্যবিত্ত উপায় খুঁজছে পরিত্রাণের। এদিকে পেট্রোল-ডিজেলের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধির জেরে বাজারে প্রায় সবকিছুরই দাম বাড়ছে রোজ। তেলের দাম কমার কোনও লক্ষণ নেই। সামনেই বাংলা সহ একাধিক রাজ্যের বিধানসভা ভোট। ভোট ঘোষণার পর দাম কমার সম্ভাবনা আছে? অবাক হলেন?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন কর্ণাটক ভোটের কথা।
২০১৮ সালের ১২ মে ভোট ছিল দক্ষিণের রাজ্য কর্ণাটকে। বিজেপির সঙ্গে সরাসরি লড়াই কংগ্রেস-জেডিএস জোটের। সেই সময় দেশে তেলের দাম কী অবস্থায় ছিল? আসুন দেখে নেওয়া যাক, কর্ণাটক ভোটের আগে তেলের দামের বাড়া-কমার ইতিবৃত্ত।
পেট্রল, ডিজেলের দাম নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামের উপর। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম টানা সাত দিন ধরে বাড়লেও ভারতের তেল কোম্পানিগুলি পেট্রোল-ডিজেলের দাম শেষ বাড়ায় ২৪ এপ্রিল।
২০১৮ এর ২৩ এপ্রিল আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ৭৪.০১ ডলার। ভারতীয় তেল কোম্পানিগুলি ওই দিন লিটার পিছু ২৪ পয়সা দাম বাড়ায়। অথচ, ২৪ এপ্রিল আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু ৭৪.৬৩ ডলার হলেও ভারতীয় বাজারে পেট্রোল ডিজেলের দাম অপরিবর্তিত ছিল। এমনকী ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে দাম বেড়ে ৭৪.৬৯ ডলার হলে তাৎপর্যপূর্ণভাবে ভারতের বাজারে পেট্রল ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পায়নি।
[আরও পড়ুন- শনিবার রাজ্যে আসছে ১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী, ২৫ তারিখের মধ্যে আরও ১২৫ কোম্পানি]
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সেবার এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে একই বিন্দুতে থেমে ছিল তেলের দাম। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, কর্ণাটকে ভোট শেষ হতেই আবার তরতর করে বাড়তে শুরু করে তেলের দাম।
এবার আবার আকাশ ছুঁতে দৌড় লাগিয়েছে পেট্রোল-ডিজেল। এবার আবার আসছে ভোট। কর্ণাটকের উদাহরণ দেখিয়ে তাই অর্থনীতিবিদদের একটি অংশ বলছেন, এবারও রাতারাতি থমকে যেতে পারে তেলের দাম বৃদ্ধি। এক ধাক্কায় কয়েক টাকা দাম কমে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
১ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় পেট্রোলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৮৭ টাকা ৬৯ পয়সা, ১৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় পেট্রোলের দাম ৯১ টাকা ৪১ পয়সা প্রতি লিটার। ফেব্রুয়ারি মাসে রোজ পেট্রল ডিজেলের দাম বেড়েছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এখন ক্রমাগত দাম বাড়লেও বাংলায় ভোট ঘোষণার পর হয়ত এক ধাক্কায় পেট্রোলের দাম কমাতে পারে কেন্দ্র। কর্ণাটক ভোটের মতো দাম অপরিবর্তিতও রাখা হতে পারে।
যদিও কেন্দ্র এই ফর্মুলা মানতে রাজি নয়। তারা জানাচ্ছে, তেলের দাম নির্ধারণ করে তেল সংস্থাগুলো। আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দামের উপর নির্ভর করে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। তাই সেখানে সরকারের কিছু করনীয় নেই।
কিন্তু এতে ধোঁয়াশা কাটছে না। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে কিন্তু ভারতে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়েনি এমন উদাহরণ রয়েছে হাতের কাছেই।
একুশের বিধানসভা ভোটে বাংলাকে পাখির চোখ করেছে গেরুয়া শিবির। সাধারণ মানুষের আগ্রহ এখন কর্ণাটকের পুনরাবৃত্তি হয় কিনা সেদিকে।
Comments are closed.