মাওবাদী অধ্যুষিত ওড়িশার মালকানগিরি থেকে প্রথম মহিলা পাইলট হলেন অনুপ্রিয়া লকড়া।
ওড়িশার পিছিয়ে পড়া একটি জায়গা মালকানগিরি। মূলত তফশিলি জাতি ও উপজাতির বসবাস এখানে। ওড়িশা পুলিশের হাবিলদারের কন্যা অনুপ্রিয়ার বরাবরই স্বপ্ন দেখার অভ্যেস। পড়াশোনায় আগাগোড়া ভাল এই ছাত্রীটি ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতেন আকাশে ওড়ার। সেই স্বপ্নকে বাস্তব করতে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোর্স অসমাপ্ত রেখেই যোগ দিয়েছিলেন এভিয়েশন অ্যাকাডেমিতে। এরপর দীর্ঘ ৭ বছরের চেষ্টা আর অধ্যবসায়ের জোরে প্রত্যন্ত মালকানগিরি থেকে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বছর ২৩ এর তরুণী। একটি বেসরকারি এয়ারলাইনের সহকারী পাইলট হিসাবে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন সত্যি করলেন অনুপ্রিয়া লকড়া।
অনুপ্রিয়ার বাবা মরিনিবাস লকড়া ওড়িশা পুলিশের হাবিলদার, মা জামাজ ইয়াসমিন লকড়া গৃহকর্ত্রী। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েটি ছেলেবেলা থেকেই বইয়ের পোকা। মালকানগিরির এক কনভেন্ট স্কুলে পড়াশোনার পর সেমিলিগুড়ার একটি স্কুল থেকে বারো ক্লাস পাশ করেন। এরপর ভুবনেশ্বরের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু মাঝপথে ইঞ্জনিয়ারিং ছেড়ে দেন। শুরু করেন পাইলট এন্ট্রান্স টেস্টের প্রস্তুতি। ২০১২ সালে ভুবনেশ্বরের পাইলট ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন। দীর্ঘ ৭ বছর আকাশে ওড়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতির পর সম্প্রতি একটি বেসরকারি এয়ারলাইনের সহকারি পাইলট হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি। আর সেই সঙ্গে ওড়িশার মাওবাদী অধ্যুষিত পিছিয়ে পড়া জেলার প্রথম মহিলা পাইলট হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ২৩ বছরের অনুপ্রিয়া।
তাঁর নজিরবিহীন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ও গর্বিত মালকানগিরি। শুভেচ্ছাবার্তায় ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক বলেন, অনুপ্রিয়া লকড়ার সাফল্যের খবরে তিনি ভীষণ আনন্দিত। ট্যুইটারে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল অনুপ্রিয়ার ঐকান্তিক প্রয়াস আর গভীর অধ্যবসায়। পাইলট হিসাবেও নিজের দক্ষতা প্রমাণ করবেন মালকানগিরির অনুপ্রিয়া, আশাবাদী নবীন পট্টনায়েক। অনুপ্রিয়া লকড়ার মায়ের কথায়, অন্য মেয়েদেরও অনুপ্রাণিত করবে মেয়ের এই নজিরবিহীন সাফল্য।
Comments are closed.