‘আমি যদি দল ছেড়ে দিই তাহলে কি মমতা ব্যানার্জির দল উঠে যাবে?’ বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জির এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এবার কি এবার বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুব্রতবাবুও দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন? বিধানসভা ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারী, শীলভদ্র দত্ত সহ তৃণমূলের তাবড় নেতৃত্বের দল ছাড়ার প্রেক্ষিতে এই প্রশ্নই জোরাল হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
ঠিক কোন প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য করেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী?
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দুর দলত্যাগের প্রসঙ্গ উঠে আসে। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগ কতটা প্রভাব ফেলতে পারে তৃণমূলে। এর উত্তরে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রীর মন্তব্য, তৃণমূল অনেক বড় দল। এতবড় দলে আমি বা কেউ যদি না থাকি তার উপর দলের তার উপর দলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে না। কিন্তু বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে বিধায়ক ও নেতাদের দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের আশঙ্কা কি শাসক দলের পক্ষে চিন্তার নয়? এর প্রতিক্রিয়ার সুব্রত মুখার্জির পাল্টা প্রশ্ন, ‘সারা পৃথিবীতে যত গণতান্ত্রিক দল আছে সেখানে
কয়েকজন পদত্যাগ করলে দল উঠে গিয়েছে এমন নজির কি আছে? এরপরেই তাঁর মন্তব্য, ‘আমি যদি দল ছেড়ে দিই তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল উঠে যাবে?’ তিনি আরও বলেন, এটা বোঝা উচিত যে, একটা-দুটো নেতার দলত্যাগে কোনও প্রভাব পড়ে না পার্টিতে। শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগ তৃণমূলের কাছে কোনও বড় বিষয়ই নয় বলে দাবি করেন সুব্রত মুখার্জি।
কিন্তু একের পর এক তৃণমূল নেতার দলছাড়ার প্রেক্ষিতে সুব্রত মুখার্জির এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কিছুদিন আগেই বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ দাবি করেছিলেন, সৌগত রায়ের মতো বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদরাও বিজেপিতে যোগ দেবেন। তখন বিজেপির তরফ থেকে কেউ কেউ সুব্রত বাবুরও দিকেও ইঙ্গিত করেছিলেন। যদিও তৃণমূলের তরফে এসব ভিত্তিহীন অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়। তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকে হাজির হয়ে সুব্রত বাবুও নিয়মিত বিজেপির দিকে আক্রমণ শানাচ্ছেন। তিনি এও অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল ছেড়ে কেউ বিজেপিতে গেলে তাঁকে প্রার্থী করা বিজেপির থিয়োরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরেও সুব্রত বাবুর বৃহস্পতিবারের মন্তব্য নিয়ে জল্পনা দানা বাধছে।
Comments are closed.