যে বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে তাদের কাছে যোগ্য নেতাই নেই। তাই কিছু সুযোগসন্ধানী ও ধান্দাবাজ আজ উড়ে এসে জুড়ে বসছে সেখানে। মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখমন্ত্রীর লোভ দেখিয়ে একের পর এক দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের নিয়ে দল ভরাচ্ছে বিজেপি। সোমবার তৃণমূলে যোগ দিয়েই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ।
বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ও বিজেপি, দুই দলেই একের পর এক নেতা দলবদল করছেন। তবে সোমবার বেশ অপ্রত্যাশিতভাবেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদের স্ত্রী। আর দলে যোগ দিয়েই বঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর দলবদল প্রসঙ্গে সুজাতা জানান, বঙ্গ বিজেপির কাছে কোনও উল্লেখযোগ্য নেতাই নেই। তাদের এখন ৬ জন মুখ্যমন্ত্রী ও ১৩ জন উপমুখ্যমন্ত্রীর মুখ। পদের লোভ দেখিয়ে তৃণমূলের একের পর এক দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাকে বিজেপিতে নেওয়া হচ্ছে, অভিযোগ সুজাতার। তিনি আরও বলেন, বাংলায় ভোটের সময় বিজেপিকে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর মুখ দেখিয়ে প্রচার করতে হচ্ছে। যে পরিবারের প্রধান মুখই ঠিক হয়নি, সেখানে থাকা ঠিক বলে মনে করিনি।
সদ্য তৃণমূলত্যাগী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকেও নাম না করে নিশানা করেন সুজাতা খাঁ। বলেন, বিজেপি যোগ্য লোককে জায়গা দেয় না। উড়ে এসে জুড়ে বসা, অন্যদলের ‘পচা আলুদের’ বিজেপিতে নেওয়া হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীর লোভ দেখিয়ে। তিনি যোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রীর হওয়ার লোভ ছিল ওঁনার। কিন্তু কোন জাদুবলে দুর্নীতিগ্রস্তরা বিজেপিতে চলে গেলে তাঁদের হাত সাফ হয়ে যাচ্ছে? প্রশ্ন তাঁর। তিনি বলেন, গত ১০ বছর ধরে তৃণমূলের হয়ে ক্ষমতা নিংড়ে নিয়ে আজ দলের দুঃসময়ে অন্য দলে ঝাঁপ দিচ্ছেন ওই নেতা। শুভেন্দু প্রসঙ্গে তাঁর আরও মন্তব্য, দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। এঁরা ধান্দাবাজ, স্বার্থপর, ভোগী এবং পাঁচিলে বসে থাকা নেতা। যে কোনও সময় অন্য দলে চলে যেতে পারেন।
সুজাতা আরও বলেন, যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই ছিল, তাদেরই দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের নিয়ে আজ বিজেপি তৃণমূলের ‘বি- টিম’ গঠন করেছে। তাঁর কথায়, তাই রাজনীতি করলে ভেজাল বি- টিমে নয়, তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি ও ‘দাদা’ অভিষেক ব্যানার্জির ‘আসল’ তৃণমূল দলটা করব।
তাহলে সুজাতার হাত ধরেই কি সৌমিত্র খাঁও ফের তৃণমূলে ফিরবেন? বিজেপি সাংসদের স্ত্রীয়ের উত্তর, স্বামীর সুবুদ্ধি হোক, তিনিও এখানে চলে আসুন। পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, কে বলতে পারে রাজ্য বিজেপির সভাপতিও আগামীতে তৃণমূলে আসবেন না?
‘১৯ লোকসভা ভোটের আগে এক মামলার প্রেক্ষিতে নিজের কেন্দ্রে ঢুকে নির্বাচনী প্রচার করতে পারেননি সৌমিত্র খাঁ। স্বামীর হয়ে মাঠে ময়দানে ঘুরে সভা করেছেন সুজাতা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেছেন। সেই তিনিই এখন বিজেপিতে যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়ে তাঁর মন্তব্য, এখানে যোগ্য মর্যাদা পাব এই আশা নিয়েই এসেছি।
Comments are closed.