এবার পুরুষদের পাশাপাশি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন মহিলারাও। কেন্দ্রীয় সরকারকে চিরাচরিত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার বার্তা দিয়ে ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের সমালোচনাও করেছে।
সেনাবাহিনীতে মহিলা নেতৃত্ব নিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, শুধুমাত্র কম্যান্ডিং অফিসারই নয়, সেনাবাহিনীর যে কোনও পদে মহিলাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা থাকা উচিত নয়। শীর্ষ আদালতের এই অনুমোদনের ফলে এবার পুরুষ সহকর্মীদের মতোই স্থায়ী কমিশনড পদে নিযুক্ত হতে পারবেন মহিলারাও।
সম্প্রতি কম্যান্ডিং অফিসারের পদের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন কয়েকজন মহিলা। সেই আবেদনের বিরোধিতা করে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে কোনও র্যাঙ্কে পুরুষদের আধিপত্য বেশি। আর এই জওয়ানরা মূলত গ্রামীণ এলাকা থাকে আসেন। সংস্কারবদ্ধ মানসিকতা হওয়ায় মহিলা কম্যান্ডিং অফিসারের সঙ্গে কাজ করা তাঁদের পক্ষে সুবিধাজনক হবে না। সেই সঙ্গে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের সময় যে শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তার প্রয়োজন, সেটা মহিলাদের ক্ষেত্রে খুব একটা নেই বলেই সুপ্রিম কোর্টে দাবি করে কেন্দ্র।
সোমবার কেন্দ্রের এই মানসিকতা ও যুক্তিকে বৈষম্যমূলক বলে সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি অজয় রাস্তোগির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মহিলাদের শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে তাঁদের অধিকারের কোনও যোগসূত্র থাকতে পারে না। কেন্দ্রের এই চিরাচরিত মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন বলে সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন কেন্দ্রের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়, সেনাবাহিনীতে কোনও মহিলা নেতৃত্ব দেবেন, সেই মানসিকতাই এখনও তৈরি হয়নি বাহিনীর মধ্যে। তাছাড়া মাতৃত্বকালীন ছুটি সহ নানা ব্যাপারে সমস্যা রয়েছে। কেন্দ্রের এই যুক্তিকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘বিরক্তকর’ বলে বর্ণনা করে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই চিরাচরিত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন।
বিচারপতি চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি রাস্তোগির মন্তব্য, প্রশাসনের মানসিকতা বদলের প্রয়োজন আছে। তবেই সেনাবাহিনীর মধ্যে এই নারী ও পুরুষ বৈষম্য দূর হবে। শুধু কম্যান্ডিং অফিসার নয়, সেনাবাহিনীর যে কোনও পদে মহিলাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা থাকা উচিত নয়।
Comments are closed.