গত ১ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্সি জেল থেকে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি লেখেন সারদা কর্ণধার সুদীপ্ত সেন, যাকে কেন্দ্র করে ফের রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনায় উঠে এসেছে চিট ফান্ড কাণ্ড। এবার সেই চিঠির উদ্দেশ্য নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলে সিবিআই ডিরেক্টরকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সুদীপ্ত সেনের চিঠি নিয়ে সিবিআইকে তদন্ত করতে বলে শুভেন্দুর বক্তব্য, চাপে পড়ে এই চিঠি লিখতে বাধ্য হয়েছেন সারদা কর্ণধার।
পড়ুন: সিবিআই ডিরেক্টরকে লেখা শুভেন্দু অধিকারীর চিঠি
সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে, প্রেসিডেন্সি জেল থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে একটি চিঠি লিখেছেন সারদা কর্ণধার এবং এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন। সেই চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী সহ একাধিক রাজনৈতিক নেতার নাম করে সারদা কর্ণধার দাবি করেছেন, কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন তাঁরা। সুদীপ্ত সেনের লেখা চিঠিতে অভিযুক্ত নেতাদের মধ্যে দু’জন সিপিএম, একজন কংগ্রেস ও একজন বিজেপির। শুভেন্দু ছাড়াও আরও কয়েকজন নেতার নাম লিখে সুদীপ্ত সেনের অভিযোগ, যাঁরা আমার কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করেছেন, তাঁরাই এখন বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন দেখে কষ্ট হয়।
বেশ কিছু দিন হল শুভেন্দু রাজ্য মন্ত্রিসভা ছেড়েছেন। সূত্রের খবর, তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদের আনুষ্ঠানিকতা কেবল বাকি। এই প্রেক্ষিতে গত ১০ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারী চিঠি দিলেন সিবিআই ডিরেক্টরকে। চিঠিতে প্রাক্তন পরিবহণ, সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী লিখেছেন, বিচারাধীন বন্দি সুদীপ্ত সেন এতদিন বাদে চিঠি লিখলেন এবং তা সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল। ঘটনা পরম্পরা দেখে তিনি মনে করেন, এর পিছনে জেল কর্তৃপক্ষ এবং বিরাট প্রভাবশালী কেউ আছেন! চাপের মুখে পড়ে এই চিঠি লিখতে বাধ্য হয়েছেন সারদা কর্তা। কিন্তু সেই বিরাট প্রভাবশালী ব্যক্তি কে বা সুদীপ্ত সেনকে কী চাপ দেওয়া হয়েছিল, তা লেখেননি পদত্যাগী মন্ত্রী। বিরাট প্রভাবশালী বলে শুভেন্দু কাকে ইঙ্গিত করছেন তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
শুভেন্দু সিবিআই ডিরেক্টরের কাছে আবেদন করেছেন চিঠি লেখার জন্য এই সময় কেন বেছে নেওয়া হল, তা খতিয়ে দেখতে। তাঁর আবেদন চিঠির বিষয়বস্তুকে সামগ্রিক ঘটনা প্রবাহের থেকে বিচ্ছিন্নভাবে যেন না দেখা হয়।
শুভেন্দু ২৭ নভেম্বর মমতা মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানারকম জল্পনার মাঝেই জেল থেকে লেখা সুদীপ্ত সেনের চিঠি রাজ্যে আলোড়ন তৈরি করে। এখনও শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্য এবং বিধায়ক। এই পরিস্থিতিতে সিবিআই ডিরেক্টরকে চিঠি লিখে সুদীপ্ত সেনের চিঠি নিয়ে তদন্ত করতে বললেন শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, সারদা মামলা প্রায় গুটিয়ে এনেছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই এই মামলায় একাধিক ব্যক্তি গ্রেফতারও হয়েছেন। এখন শুভেন্দু অধিকারীর চিঠির সূত্র ধরে সিবিআই বিধানসভা ভোটের আগে নতুন করে কোনও তদন্ত শুরু করে কিনা সেদিকেও নজর রাজনৈতিক মহলের।
Comments are closed.