রাম মন্দির: এবার তথাগত রায়ের নিশানায় জ্যোতি বসু! মার্ক্স, লেনিনের নাম উল্লেখ করে কটাক্ষ

মমতা ব্যানার্জি, অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি, সুজন চক্রবর্তী, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার মেঘালয়ের রাজ্যপালের ট্যুইট আক্রমণ প্রয়াত সিপিএম নেতা এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে। রাম মন্দির ইস্যুতে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে বেনজির কটাক্ষ রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির।
সুপ্রিম কোর্ট তার ঐতিহাসিক ৯/১১ রায়ে বলেছে, বাবরি মসজিদের জায়গায় তৈরি হবে রাম মন্দির। বিকল্প হিসেবে ৫ একর জমি দেওয়া হবে মসজিদ নির্মাণের জন্য। মন্দির তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে ৩ মাসের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এই অবস্থায় রবিবার রাতে একটি ট্যুইট করেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়। সেখানে জ্যোতি বসুর নাম ব্যবহার করার পাশাপাশি বাম মতাদর্শের দিকেও তীব্র ব্যঙ্গ ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি।
১৯৮৯ সালে যখন অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরির জন্য দেশজুড়ে শিলা সংগ্রহের কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি, সেই সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে জ্যোতি বসু। স্বভাবতই বিজেপির এই রাম শিলা সংগ্রহের কর্মসূচিতে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন আজীবন বামপন্থী জ্যোতিবাবু। কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ইট পুজো। সেই সময়ের কথা বলতে গিয়ে তথাগত রায় ওই কটাক্ষই ফিরিয়ে দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। রবিবার রাত ৯ টায় করা ট্যুইটে তথাগত রায় লিখেছেন, ১৯৮৯ সালে রাম শিলা সংগ্রহের কর্মসূচির প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে জ্যোতি বসু এর নাম দিয়েছিলেন ইট পুজো। তিনি যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে দেখতেন রাম মন্দির নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরুর পথে এবং তাঁর মার্ক্স ও লেনিনের ঠাঁই হয়েছে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে।


রাজ্যপাল তথাগত রায় ইদানীং যেমন নিয়ম করে তৃণমূল বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তেমনই পাল্লা দিয়ে চলছে বাংলার বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে তাঁর মন্তব্য, যা বহু ক্ষেত্রেই বিতর্ক সৃষ্টি করছে। কখনও তাঁর নিশানায় পড়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, আবার কখনও তথাগতর ট্যুইটে যাদবপুরের পড়ুয়ারা হয়েছে মাওবাদী। কিন্তু রাম মন্দির ইস্যুতে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে যেভাবে নিশানা করলেন একটি রাজ্যের রাজ্যপাল, তাতে অন্য ছায়া দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে ব্যঙ্গ করার পাশাপাশি যেভাবে মার্ক্স-লেনিনকেও আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলার কথা বলেছেন, তাতে আসলে বামপন্থী রাজনীতিকেই কাউন্টার করার চেষ্টা করেছেন তথাগত, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহদের পূর্বসূরী তথাগত রায় রাম মন্দির রায়ের সঙ্গে সুকৌশলে বামপন্থী রাজনীতিকে কটাক্ষ করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আসলে বামপন্থারই হার হল।

Comments are closed.