কোভিডে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুলে যাওয়া। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা প্রায় ভুলতে বসেছে পড়ুয়ারা। কিন্তু পড়ুয়াদের মধ্যে সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসানোর অভ্যাস ঠিক রাখতে নয়া উদ্যোগ নিয়েছেন কোচবিহারের জোরপাচকি এলাকার শিক্ষক জীবন বসাক। তাঁর হাঁক শুনেই ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসে যায় এলাকার পড়ুয়ারা। হাইস্কুলের এই শিক্ষক মশাইয়ের কাজ রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে বাইক নিয়ে এলাকার পড়ুয়াদের ঘুম ভাঙানো।
এলাকার ওলি গলি কষে ছাত্র ছাত্রীদের বাড়িতে বাড়িতে যান জীবন বসাক। ঘুম ভাঙিয়ে তিনি খোঁজ নেন রাতে কটা পর্যন্ত পড়েছে, কী পড়েছে, খবর নেন তিনি। লকডাউনের সময়েও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের পড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু এখন স্কুল খুলেছে, শুরু হয়েছে নবম শ্রেণি থেকে ক্লাস। সামনেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই আর সময় নষ্ট না করে পড়াশোনার অভ্যাস ঠিক রাখতে সকাল সকাল পড়ুয়াদের ঘুম ভাঙিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
ছোটবেলায় নিজের অভ্যাসকে কাজে লাগিয়ে এই উদ্যোগ জীবন বসাকের। মাধ্যমিকের সময় তাঁর শিক্ষক এইভাবে সকালে ঘুম ভাঙিয়ে পড়াশোন করাতেন। সেই সময় খারাপ লাগলেও পরে সেই অভ্যাসই তাঁর জীবনে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। শিক্ষকতার কাজের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তাই নিজের ছাত্র ছাত্রীদের এইভাবেই বড় করতে চান তিনি।
জীবন বাবু জানিয়েছেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়েই এই কাজ শুরু করছেন তিনি। নভেম্বর মাসে এই কাজ শুরু করেছেন তিনি। এই একমাসে এলাকাবাসীদের মন জয় করে ফেলেছেন তিনি। এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, জীবন বসাকের জন্য তাঁরা ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে অনেকটাই চিন্তা মুক্ত। কারণ শুধুমাত্র স্কুলে নয়, তিনি বাড়িতে এসেও পড়াশোনার খবর নিয়ে যান।
Comments are closed.