যে মামলার নিষ্পত্তি হয়নি ধনখড় অব্যাহতি পেলেন কী করে? জৈন হাওয়ালা কাণ্ড নিয়ে রাজ্যপালকে প্রশ্ন তৃণমূলের
জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারির চার্জশিটে তাঁর নাম নেই বলে সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবার এক সাংবাদিককে উদ্ধৃত করে তৃণমূল দাবি করল, অর্ধসত্য তথ্য দিয়েছেন রাজ্যপাল ধনখড়। সুখেন্দুশেখর রায়ের চ্যালেঞ্জ, মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তাঁর প্রমাণ দিন জগদীপ ধনখড়।
জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়াল রাজ্যের শাসক দল। হাতিয়ার জৈন হাওয়ালা কাণ্ড। মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে নথি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বসেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ সুখেন্দুশেখর রায় এবং মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সুখেন্দুশেখর রায় দাবি করেন, জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে জনৈক জগদীপ ধনখড়ের নাম পাওয়া গিয়েছে। জৈন ডায়েরির একটি পাতা দেখিয়ে তাঁর দাবি, সেখানে জগদীপ ধনখড়ের নামের পাশে ৫ লেখা আছে। সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, এই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। তাহলে কীভাবে নিজেকে অব্যাহতি দিচ্ছেন রাজ্যপাল? সাংবাদিক বিনীত নারায়ণকে উদ্ধৃত করে সুখেন্দুশেখর বলেন, রাজ্যপাল কাল দাবি করলেন তিনি নিষ্পাপ শিশুর মতো পবিত্র। কিন্তু বাস্তব তা বলছে না।
সুখেন্দুশেখর রায়ের দাবি, সিবিআই-ইডি জৈন হাওয়ালা কাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছিল। কিন্তু আইন ও বিচারব্যবস্থার গোলকধাঁধায় বিষয়টি হারিয়ে যায় বলে দাবি তৃণমূলের রাজ্যসভার চিফ হুইপের। সুখেন্দুশেখর বলেন, ৩০ বছর অতিক্রান্ত কিন্তু সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে বলে জানা যায়নি। তাঁর কথায়, যে মামলার ট্রায়ালই হয়নি, সেখানে নিজেকে নির্দোষ বলেন কী করে জগদীপ ধনখড়? একই প্রশ্ন করেছেন সিনিয়ার সাংবাদিক বিনীত নারায়ণও।
সাংবাদিক বিনীত নারায়ণ এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে। প্রধানমন্ত্রী ধনখড়কে রাজ্যপাল করার আগে ঠিক মতো খোঁজখবর করেননি। করলে ধনখড়কে এই পদে বসাতেন না।
শুধু জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারিই নয়, এদিন রাজ্যপালের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তোলা বিজেপি নেতাদের বৈঠক নিয়েও প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। ব্রাত্য বসুর অভিযোগ, দার্জিলিংয়ে গিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আন্দোলন গড়ে তলার পরামর্শ দিচ্ছেন। একইসঙ্গে জিটিএর তহবিল তদন্তের রাজ্যপালের দাবিকেও উড়িয়ে দিয়েছেন ব্রাত্য। তাঁর পাল্টা দাবি পার্বত্য অ্যাফেয়ার্স দফতরের থেকে কি রাজ্যপাল হিসেব চেয়েছিলেন? যদি তা না করেন তাহলে সাংবাদিকদের যা বললেন সেটা কি গ্যালারি শো ছিল? ব্রাত্যর খোঁচা, ওই দফতরের মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী নিজে। রাজ্যপাল কি মুখ্যমন্ত্রীর সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে জিটিএ সংক্রান্ত নথি চেয়েছিলেন?
সবমিলিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে সুর সপ্তমে নিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। ৩ দশক পুরনো জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারির ফিরে আসা তারই স্পষ্ট ইঙ্গিত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
Comments are closed.