রাজভবন নবান্ন সংঘাতে নয়া মোড়। এবার খোদ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফেক নিউজ ছড়ানোর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করল তৃণমূল। একযোগে ট্যুইট সাংসদ তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী এবং তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জির। ঘটনায় তোলপাড় রাজনৈতিক মহল।
সম্প্রতি গড়িয়া শ্মশানে কিছু দাবিদারহীন মৃতদেহ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ ওঠে করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার হচ্ছিল। একটি ভাইরাল ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দাবি করা হয়, এভাবেই সকলের চোখের আড়ালে করোনায় মৃতদের দেহ পোড়ানো হচ্ছে। এই ঘটনা নিয়েও যথারীতি ট্যুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
পরে কলকাতা পুলিশ জানায় এই ভিডিওটি ফেক। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দেয়, করোনাভাইরাসের সঙ্গে এই মৃতদেহগুলোর কোনও সম্পর্কই নেই। এই প্রসঙ্গে কলকাতার নগরপালকে একটি চিঠিও দেন এনআরএস হাসপাতালের প্রিন্সিপাল প্রফেসর শৈবালকুমার মুখার্জি। সেই চিঠিতে শৈবাল মুখার্জি আবেদন করেন, করোনায় মৃতদের দেহ বলে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে ভুয়ো। মৃতদের সঙ্গে করোনাভাইরাসের কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর আবেদন, এই ভিডিওটি কিংবা ভিডিওতে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে, তা ছড়াচ্ছেন যাঁরা, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এবার সেই সূত্রেই সরাসরি রাজ্যপাল ধনখড়ের দিকে ফেক নিউজ ছড়ানোর মত গুরুতর অভিযোগ তুললেন তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। শনিবার দুপুরে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী নিজের ভেরিফায়েড হ্যান্ডেল থেকে সরাসরি জগদীপ ধনখড়কে উদ্দেশ্য করে লেখেন, বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ফেক নিউজ এবং ভুল তথ্য ছড়াতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে গিয়েছেন। তারপর তিনি লিখেছেন, আপনি যে দায়িত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, তাতে এই কাজ করার পর আপনার নিজের উপরই লজ্জা হওয়া উচিত। তাৎপর্যপূর্ণভাবে দীনেশ ত্রিবেদী এই ট্যুইটে ব্যবহার করেছেন হ্যাশট্যাগ বিজেপি ম্যালাইনস বেঙ্গল।
রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি রাজ্যপালের উদ্দেশে ট্যুইট করে ২৯ মে কলকাতা পুর সংস্থার জারি করা একটি নির্দেশনামা এবং এনআরএস হাসপাতালের প্রিন্সিপালের চিঠি শেয়ার করেন। ট্যুইটে পার্থ চ্যাটার্জি লেখেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রতিনিয়ত বাংলার মানুষের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মহামান্য রাজ্যপাল যেন ফেক নিউজ শেয়ার না করেন।
পদে বসার পর থেকেই বিভিন্ন কারণে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে চলেছেন জগদীপ ধনখড়। অনেকেই রাজভবনের এমন অভূতপূর্ব কর্মকাণ্ডে বিশেষ রাজনৈতিক প্রভাব আছে বলে অভিযোগ করেছেন। বিভিন্ন সময় জগদীপ ধনখড়কে নিয়ে সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে কংগ্রেস-সিপিএমের গলাতেও। একমাত্র বিজেপি বরাবর রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ফেক নিউজ ছড়ানোর অভিযোগ উঠে গেল রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। রাজভবন থেকে কী জবাব আসে, এখন সেটাই দেখার।
Comments are closed.