কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ও ফেসবুকের সম্পর্ক নিয়ে ক্রমশ ঘোরালো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক মহলে। কংগ্রেসের পর এবার ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা তথা সংস্থার সিইও মার্ক জুকেরবার্ককে চিঠি পাঠাল তৃণমূল।
এই চিঠিতে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন লিখেছেন, কয়েক বছর আগেই ফেসবুক ও বিজেপির আঁতাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সংসদে এই বিষয়ে বক্তৃতা করার পর আশা করেছিলেন, ফেসবুক হয়ত এই বিষয়ে কিছুটা নড়েচড়ে বসবে। অন্তত কিছুটা সুরাহার চেষ্টা করবে। কিন্তু উলটে বিজেপি ও ফেসবুকের ‘যোগসাজশ’ ফাঁস হয়ে গিয়েছে বলে জুকেরবার্ককে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেন তিনি। চিঠিতে তৃণমূল সাংসদ আরও লেখেন, স্বচ্ছতার জন্য ভারতে কর্মরত ফেসবুকের সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে তাঁরা তদন্ত দাবি করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে সময়কালে ফেসবুকের ভূমিকা নিয়ে তিনি বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ২০১৯ সালের জুন মাসে দলের তরফে এই বিষয়টি তিনি সংসদেও তোলেন বলে চিঠিতে লিখেছেন ডেরেক। এই চিঠির সঙ্গে সংসদে দেওয়া সেই বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকের সিইওকে পাঠাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে ডেরেক লেখেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল, তৃণমূলের তরফে এই বিষয়টি নিয়ে তারা চোদ্দ মাস আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। এখন বিবিসি, ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল, রয়টার্স ও টাইম ম্যাগাজিনের মতো সংবাদমাধ্যমও বিজেপি ও ফেসবুকের সম্পর্ক নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এর পরেই ডেরেকের আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, কয়েক মাস আগে বাংলায় ভোটের সময় তৃনমূল সমর্থকদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং পেজ মুছে দিয়েছিল বিজেপি। যা থেকে ফেসবুক ও বিজেপির মধ্যে যোগসূত্র স্পষ্টভাবে বোঝা গিয়েছে। এখন ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠু রাখতে দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের বিশ্বাসযোগ্যতার জায়গা তৈরির জন্য জুকেরবার্কের কাছে আবেদন জানান ডেরেক ও’ব্রায়েন।
প্রসঙ্গত, ফেসবুককে নিয়ে এই বিতর্কের বিষয়টি নিয়ে সংসদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে সরব হচ্ছে তৃণমূল। দলের তরফে ওই কমিটির দুই সদস্য, মহুয়া মৈত্র এবং নাদিমূল হককে বৈঠকে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত বছরের জুনে রাজ্যসভার এক অধিবেশনে ফেসবুক-বিজেপি সম্পর্ক নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। সেই ভিডিও ফের গত সোমবার ট্যুইট করে কেন্দ্রের শাসক দলের একহাত নেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার।
Comments are closed.