দলের পক্ষ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মধ্যস্থতার দায়িত্বে ছিলেন সাংসদ সৌগত রায়। কিন্তু আলোচনার মাঝেই শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। নন্দীগ্রামের বিধায়ককে নিয়ে দলের অন্দরে ও রাজনৈতিক মহলে হাজারো জল্পনার মাঝেই রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জি সম্প্রতি একাধিক বেসুরো মন্তব্য করেছেন। রাজীবের সঙ্গেও কি দলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে, এই প্রশ্নের মাঝেই রাজনীতিতে তিন ধরনের লোকের তত্ত্ব হাজির করলেন সৌগত রায়।
শনিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে সৌগত রায় রাজীব ব্যানার্জিকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বললেন, ৩ ধরনের লোক আছেন। এক, যাঁরা ভয় পান মনোনয়ন পাবেন কিনা, দুই, যাঁরা মনোনয়ন পাবেন কিন্তু ভোটে জিতবেন কিনা জানেন না, আর তৃতীয় যাঁরা মনে করেন ভোটের আগে এটাই সুযোগ, পার্টি কিছু করতে পারবে না, দর কষাকষি করি।
নিজের ৫০ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় বুঝেছেন, এনিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠকে রাজীব ব্যানার্জি ইস্যুতে বলেন সৌগত রায়। যদিও এই তিন ধরনের মধ্যে বনমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জি কোন পর্যায়ে তা খোলসা করেননি তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, শুভেন্দুর পর রাজীব ব্যানার্জি বেসুরে কথা বলছেন, দল কী ভাবছে? উত্তরে সৌগত নিজের ৫ দশকের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, ভোটের আগে কিছু লোক বিভিন্ন কথা বলেন। যাঁরা ভোট দেখেছেন তাঁরা জানেন এরকম হয়েই থাকে। আমরা চিন্তিত নই।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুভেন্দু অধিকারীর পর এবার রাজীব ব্যানার্জির পোস্টার নিয়ে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ বলেন, পোস্টার লাগানো তো গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে, কাউকে কীভাবে আটকানো যায়?
মমতা মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এর মধ্যেই দল ছাড়বেন বলেও শোনা যাচ্ছে। একইভাবে রাজ্য মন্ত্রিসভার আরেক তরুণ মুখ রাজীব ব্যানার্জি অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষণ দিচ্ছেন। তাঁকে নিয়েও ঘনীভূত দল বদলের জল্পনা। এই প্রেক্ষিতে সৌগত রায়ের ৩ ধরনের মানুষের উক্তি তাৎপর্যপূর্ণ। রাজীব ব্যানার্জিকে কোন পর্যায়ে ফেলবেন? উত্তরে বর্ষীয়ান তৃনমূল সাংসদ বলেন, আমি সাধারণ তত্ত্বটা বলে দিলাম। এবার আপনার কাজ কোন পর্যায়ে কে পড়ছে তা বের করা।
পাশাপাশি, নাগরিকত্ব ইস্যুতে মতুয়া অসন্তোষ মেটাতে এবার রাজ্য সফরে এসে ঠাকুর বাড়ি যাবেন অমিত শাহ। দলের সাংসদ তথা ঠাকুর বাড়ির অন্যতম সদস্য শান্তনু ঠাকুরের মান ভঞ্জনে নেমেছেন খোদ কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এই প্রেক্ষিতে সৌগত রায়ের কটাক্ষ, বছর পেরিয়ে গেল আইন পাশের, এখনও রুল ফ্রেম করতে পারল না কেন্দ্রীয় সরকার। কেন এতদিনেও করা গেল না সেই প্রশ্নের উত্তর আগে দিক মোদী সরকার। মমতা ব্যানার্জি গোপালনগরের সভা থেকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মতুয়ারা এদেশের নাগরিক। তারপর আর কোনও কথা থাকে না। সাংসদের অভিযোগ, বিজেপি মতুয়াদের একটি ফর্ম দেবে। তার মানে হল আপনি স্বীকার করে নিলেন আপনি নাগরিক নন। এটা মতুয়াদের সঙ্গে প্রতারণা।
Comments are closed.