সিএএ বিরোধী আন্দোলনে কেন, এনআইএ-র জিজ্ঞাসাবাদ আইআইটি গুয়াহাটির অধ্যাপক অরূপজ্যোতি সইকিয়াকে

সিএএ বিরোধী আন্দোলনের জেরে আইআইটি গুয়াহাটির অধ্যাপক তথা লেখক অরূপজ্যোতি সইকিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করল ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিবৃতি দিলেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী, প্রতাপভানু মেহেতা প্রমুখ।
ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইআইটি গুয়াহাটির ইতিহাসের অধ্যাপক অরূপজ্যোতি সইকিয়া কেন্দ্রের নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাঁকে দীর্ঘ চার ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাঁর সঙ্গে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতাদের টেলিফোনে কী কথোপকথন হয়ছে, তা জানতে চাওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে তীব্র আন্দোলন চলছে অসমে। আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈ সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এই সংগঠনের সঙ্গে অধ্যাপক অরূপজ্যোতির সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে এনআইএ। সেই সূত্রেই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় বলে খবর। অরূপজ্যোতি বিশিষ্ট লেখকও। তাঁর ‘দ্য আনকোয়াইট রিভার এ বায়োগ্রাফি অফ ব্রহ্মপুত্র’ পাঠকমহলে বিশেষ সমাদৃত। এছাড়াও আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও কৃষির ইতিহাস সম্পর্কিত একাধিক বই লিখেছেন আইআইটি গুয়াহাটির এই অধ্যাপক।
এদিকে এনআইএ-র হাতে তাঁর ‘হেনস্থা’ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিশিষ্টরা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, এমন একজন বিদ্বান ও সম্মানীয় ব্যক্তিকে এনআইএ-র এ ভাবে হেনস্থা করা বেদনাদায়ক। আমরা চাইব অধ্যাপকের সম্মান বজায় রেখে তাঁর সঙ্গে ব্যবহার করুক এনআইএ এবং তাঁর পেশাগত জীবনে যেন কোনও চাপ না আসে।
এই বিবৃতিতে সই করেছেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী, কলকাতার সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর পার্থ চ্যাটার্জি, জেএনইউ-র অধ্যাপক নীরজা গোপাল জয়াল প্রমুখ।
অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা গত ডিসেম্বরে অভিযোগ করেছিলেন, সরকারের কাছে প্রমাণ আছে যে, বেশিরভাগ শিক্ষকই নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের পিছনে রয়েছেন। তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, দিসপুরে আসাম সেক্রেটারিয়েটে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পিছনেও শিক্ষক শ্রেণির হাত ছিল। কিছুদিন আগে অসম সরকার থেকে এমন নির্দেশিকাও দেওয়া হয় যে, শিক্ষকেরা ক্লাস বন্ধ করে আন্দোলনে অংশ নিলে তাঁদের বেতন কাটা যাবে। যদিও তাতে আন্দোলনে কোনও ভাটা পড়েনি।

Comments are closed.