আরটিআই আন্দোলনকারীর খুনের ঘটনায় বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ সহ ৭ জন দোষী সাব্যস্ত

আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট অমিত জেঠুয়া হত্যা মামলায় প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দীনু বোঘা সোলাঙ্কি সহ ৭ জনকে দোষী সাব্যস্ত করল আহমেদাবাদের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। শনিবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারপতি কে এম দাভে জুনাগড়ের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দীনু বোঘা সোলাঙ্কি, তাঁর ভাই শিব সোলাঙ্কি ও আরও ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। আগামী ১১ ই জুলাই দোষীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় দেবে গুজরাত হাইকোর্ট।
জুনাগড়ের গির অভয়ারণ্যে অবৈধ খনি কারবারির বিরুদ্ধে আন্দোলন করা আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট অমিত জেঠুয়া ২০১০ সালে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন গুজরাত হাইকোর্টে। সেখানে, জুনাগড়ের বিজেপি সাংসদ দীনু বোঘা সোলাঙ্কি সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। এর পরেই, ২০১০ সালের ২০ শে জুন গুজরাত হাইকোর্টের বাইরেই গুলি করে হত্যা করা হয় আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট অমিত জেঠুয়াকে। হত্যাকাণ্ডে নাম জড়ায় তৎকালীন বিজেপি সাংসদ দীনু বোঘা সোলাঙ্কি সহ বেশ কয়েকজনের। ঘটনার তদন্তে নামে আহমেদাবাদ পুলিশের অপরাধী দমন শাখা। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত থাকা বিজেপি সাংসদ দীনু বোঘা সোলাঙ্কিকে ক্লিনচিট দেওয়া হয়।
আহমেদাবাদ পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে অসন্তোষ প্রকাশ করে গুজরাত হাইকোর্ট ২০১৩ সালে সিবিআইকে এই হত্যা মামলার তদন্তভার দেয়। এরপর ২০১৩ সালের নভেম্বরে অমিত জেঠুয়া খুনে বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে খুন ও ষড়যন্ত্রের মামলা রুজু হয় ২০১৬ সালে। কিন্তু আদালতে ১৯৬ জন প্রত্যক্ষদর্শীর মধ্যে ১০৫ জন সিবিআই তদন্তের রিপোর্টকে সমর্থন করেননি। অভিযোগ ওঠে, সাক্ষীদের ভয় দেখিয়েছে অভিযুক্তরা। ঘটনাক্রমে, মৃত অমিত জেঠুয়ার বাবা ভিখাভাই জেঠুয়া আদালতে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান। গুজরাত হাইকোর্ট সেই আবেদন গ্রহণ করে। ২০১৪ সালে ফের শুরু হয় মামলা। শনিবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের রায়কে ভারতের বিচার বিভাগের জয় বলে মন্তব্য করেন মৃত আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট অমিত জেঠুয়ার বাবা। অমিত জেঠুয়ার বন্ধু আইনজীবী আনন্দ ইয়াগনিক, যিনি নিজেও বন্ধুর হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, বলেন, আদালতের এই রায়ে প্রমাণ হল, ভারতের আইনসভা ও বিচারব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা। তিনি বলেন, প্রাক্তন বিজেপি সাংসদের মতো প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ যে ন্যায় বিচার পেতে পারে তা আরও একবার প্রমাণ হল এই রায়ে।

Comments are closed.