সুদূর আফ্রিকার একটি দেশ, যেখানকার সরকারি ভাষা বাংলা; জানুন সিয়েরা লিওন’র কথা 

শুধু বাংলা ভাষার দাবিতে লড়াইকে স্বীকৃতি জানিয়েছে গোটা বিশ্বে। আজ পৃথিবীর নানা প্রান্তে বাঙালিরা ছড়িয়ে রয়েছেন। যুগ যুগ ধরে বাঙালিরা নিজেদের মতো করে মাতৃ ভাষাকে ছড়িয়ে দিয়েছেন দেশ থেকে বিশ্বে। ২১ ফেব্রুয়ারি দুই বাংলায় আড়ম্বরের সঙ্গে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস। কিন্তু জানেন কি, শুধু বাংলা দেশ বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, সুদূর আফ্রিকাতেও এমন একটি দেশ রয়েছে যেখানকার সরকারি ভাষা বাংলা। 

ভাষা দিবসের শুভ মুহূর্তে পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলবর্তী এমনই একটি দেশের কথা আজকে আমরা জানব। সিয়েরা লিওন দেশটি বিশ্ব দরবারে টাইটেনিয়াম এবং বক্সাইটের খনিজ ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। সেই সঙ্গে এখানে বিপুল পরিমাণে সোনা এবং হীরে পাওয়া গেলেও আদতে দেশটি অত্যন্ত গরিব। দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৬১ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীন হয় সিয়েরা লিওন। যদিও স্বাধীন হওয়ার কয়েকবছরের মধ্যেই সীমাহীন দুর্নীতি, জাতীয় সম্পদের নয়ছয়ের জেরে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অরাজকতা শুরু হয়। যার ফলে ১৯৯১ শুরু হয় গৃহযুদ্ধ, যা ২০০২ সাল পর্যন্ত চলে। 

জানা যায়, সিয়েরা লিওনে এই গৃহযুদ্ধ থামাতে হস্তক্ষেপ করে জাতিসঙ্ঘ। এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে জাতিসংঘের প্রতিনিধি হিসেবে সিয়েরা লিওনে ৫৩০০ জন বাংলাদেশি সেনাও আসেন। ২০০২ সালে গৃহযুদ্ধ থামলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলা দেশের সেনারা সে দেশে ছিলেন। 

দীর্ঘদিন সে দেশে থাকায়, সেখানকার স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে বাংলাদেশের সৈনিকদের। সে দেশের অনেকেই বাংলার রীতি নীতি, ভাষা সম্পর্কে পরিচিত হন। দু-দেশের সংস্কৃতির মধ্যে এক সেতুবন্ধন তৈরি হয়।  এবং বাংলাদেশের এই অবদানের স্বীকৃতি হিসেবেই সেদেশের রাষ্ট্রপতি আলহাজ আহমেদ তেজান কাবাহ্ ‘বাংলা’ ভাষাকে সিয়েরা লিওনের ‘সাম্মানিক সরকারি ভাষা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

Comments are closed.