বিশ্বে সবচেয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ ডেনমার্ক, ভারত ৭৮ তম, ৮৭ নম্বরে কমিউনিস্ট চিনঃ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল

সম্প্রতি জার্মানির বেসরকারি সংস্থা ‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল’ প্রকাশ করেছে ‘কোরাপশন পারসেপশনস ইনডেক্স ২০১৮’। বিশ্বের মোট ১৮০ টি দেশের ওপর সমীক্ষা চালায় ‘ট্রান্সপেরেন্সি ইন্টারন্যাশনাল’। ওই সার্ভেতে শূন্য থেকে ১০০ পর্যন্ত একটি স্কেল ধরা হয়। যেখানে শূন্য হল, প্রবল দুর্নীতির সূচক এবং ১০০ দুর্নীতিমুক্ত সূচক। কোনও দেশই দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে ‘ফুল নম্বর’ তুলতে পারেনি। ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮৮ পেয়ে ডেনমার্ক দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। মাত্র ১ নম্বর কম পেয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৮৫ নম্বর পেয়ে একসঙ্গে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুইডেন ও সুইৎজারল্যান্ড। তিন ধাপ এগিয়ে ভারতের স্থান ৭৮ নম্বরে।
১০০ র মধ্যে মাত্র ১০ পয়েন্ট পেয়ে সোমালিয়া বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্র হিসেবে স্থান পেয়েছে এই রিপোর্টে। ১৩ নম্বর পেয়ে সোমালিয়ার উপরে রয়েছে সিরিয়া ও দক্ষিণ সুদান। দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে ইয়েমেন ও উত্তর কোরিয়াও রয়েছে তালিকার নীচের দিকেই।
‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৭ বছরে তাৎপর্যপূর্ণভাবে দুর্নীতি কমেছে ২০টি দেশে। এদের মধ্যে ইস্টোনিয়া, সেনেগাল ও গুয়ানার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
১৮০ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ৭৮ তম। ১০০ নম্বরের মধ্যে ভারতের স্কোর ৪১। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, দুর্নীতি দূর করতে বেশ কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে মালেশিয়া, মালদ্বীপ, পাকিস্তান ও ভারত।
উল্লেখযোগ্যভাবে চিনের অবস্থান যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছে। আগের চেয়ে দশ ধাপ পিছিয়ে চিনের বর্তমান অবস্থান ৮৭ নম্বরে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও নজিরবিহীনভাবে দুর্নীতি মুক্ত দেশের তালিকা থেকে পিছিয়ে পড়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতাধীন আমেরিকা ২০ থেকে পিছিয়ে ২২ নম্বর স্থানে রয়েছে।
ওই রিপোর্টে প্রকাশ, দুর্নীতির আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিণত হয়েছে আফ্রিকা ও মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশ।
‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল’এর রিপোর্টে লেখা হয়েছে, যে কোনও দেশের গণতন্ত্রের ভীতকে নড়িয়ে দেয় দুর্নীতি। যে দেশে দুর্নীতি যত কম, সে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে অর্থনীতি তত মজবুত হয়। সেই সঙ্গে সরকারের উপর মানুষের আস্থা দৃঢ় হয়। ‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল’ সংস্থার চেয়ারপার্সন ডেলিয়া ফেরাইরা রুবিওর কথায়, যেখানে গণতন্ত্র দুর্বল সেখানেই দুর্নীতির থাবা। কয়েকটি দেশের অতি জনপ্রিয় নেতা অগণতান্ত্রিক উপায়ে দুর্নীতিকে ব্যবহার করেন নিজেদের স্বার্থে ।

Comments are closed.