তেলেভাজার দোকান সামলে প্রশিক্ষণ ছাড়া প্রথম চেষ্টাতেই গেট উত্তীর্ণ উত্তরাখণ্ডের সাগর

বাবার তেলেভাজার দোকান। সন্ধে নামতেই ফুলুরি, পেঁয়াজি আর তেলেভাজার সন্ধানে গ্রামবাসীরা ভিড় করেন দোকানে। বাবাকে সাহায্য করতে দোকানে বেগুনি-ফুলুরি ভাজা কিংবা খদ্দেরদের হাতে গরম গরম তেলেভাজা তুলে দিয়েই চলছিল ছেলেটির জীবন। ভবিষ্যতে এই দোকানেই বসতে হবে তাঁকেও। এমনটাই ভেবেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ছেলেটি ভেবেছিল অন্যরকম।

উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার পিপলকোটি গ্রামের বাসিন্দা সাগর শাহ। পরিবার চলে একটি ছোট্ট তেলেভাজার দোকান চালিয়ে। বাবাকে সাহায্য করতে ছেলে সাগরও থাকে বাবার সঙ্গে সঙ্গেই। কিন্তু তেলেভাজার দোকান চালিয়ে যে জীবনে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনা যাবে না, একেবারে গোড়াতেই তা বুঝেছিল সাগর। বুঝেছিল, এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে পারে সে নিজেই। সেই লক্ষ্যে পড়াশোনা শুরু করে দেরাদুনের কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করা সাগর শাহ। কঠোর সাধনার পর অবশেষে লক্ষ্যে পৌঁছেছে সাগর শাহ।

কোনও কোচিং সেন্টারের প্রশিক্ষণ ছাড়া, প্রথমবারেই GATE-এ উত্তীর্ণ হল উত্তরাখন্ডের চামোলি জেলার পিপলকোটি গ্রামের বাসিন্দা সাগর শাহ। সর্বভারতীয় পরীক্ষায় প্রস্তুতি নেওয়ার মতো ভালো কোচিং সেন্টার নেই চামোলিতে। যা আছে, সেখানেও অবশ্য ভর্তি হওয়ার মতো টাকা ছিল না সাগরের পরিবারের। গ্রামের সরকারি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা, তারপর দেরাদুনের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেছে সাগর শাহ। কিন্তু উচ্চশিক্ষার ইচ্ছা আর পরিবারকে আর্থিক স্বচ্ছলতা দেওয়ার স্বপ্নের কাছে কোনও বাধাই তেমন বড় হয়ে উঠতে পারেনি। বাবার তেলেভাজার দোকান সামলে, কঠোর পরিশ্রম করে প্রথমবারেই গেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে সাগর শাহ। নিজের সাফল্যের জন্য বাবা-মা, কাকা ও কলেজের শিক্ষকদের অবদান বিশাল বলে জানিয়েছে সাগর শাহ। তার কথায়, যে কোনও সাফল্যের চাবিকাঠি হল আত্মবিশ্বাস আর কঠোর পরিশ্রম।

Comments are closed.