বিশ্বের দরবারে বাংলার জয়জয়কার, কন্যাশ্রীর পর এ বছর সবুজসাথী প্রকল্প পেল রাষ্ট্রপুঞ্জের সেরার সেরা সম্মান
‘কন্যাশ্রী’র পর এবার ‘সবুজসাথী’। বিশ্বমঞ্চে ফের স্বীকৃতি পেল বাংলার প্রকল্প। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নানা জনপরিষেবামূলক প্রকল্প নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফর্মেশন অ্যান্ড সোসাইটি বা WSIS। সেখানে গোটা বিশ্বের ১৬০টি দেশের ৮০০টি প্রকল্পের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে ‘সবুজসাথী’কে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সাত নম্বর ক্যাটেগরি ই-গভর্নমেন্টে ‘সেরার সেরা’ সম্মান ছিনিয়ে এনেছে বাংলা। সৌজন্যে সবুজসাথী প্রকল্প।
পাশাপাশি বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে ‘উৎকর্ষ বাংলা’ নামে আরও একটি প্রকল্প। রাজ্য সরকারের তরফে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুরস্কার গ্রহণ করেন অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের ওএসডি সঞ্জয় থাড়ে। এর আগে, ২০১৭ সালে ৬৩ টি দেশের ৫৫২ টি জনপরিষেবামূলক প্রকল্পের মধ্যে, ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প বিশ্বের দরবারে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’এ সম্মানিত হয়েছিল। এবার বিশ্বসেরা খেতাব ছিনিয়ে নিল ‘সবুজসাথী’।
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত স্কুল পডুয়াদের জন্য বিনামূল্যে সাইকেল বিতরণ করা হয় সবুজসাথী প্রকল্পে। সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর শুরু হওয়া প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত প্রায় এক কোটি সাইকেল বিলি করা হয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় সাইকেল যোগাযোগ তো বটেই, হয়ে উঠেছে স্কুলছুট ঠেকানোর মাধ্যম। একটা সাইকেল কীভাবে একটি রাজ্যের আর্থ-সামাজিক কাঠামোয় পরিবর্তন এনেছে, তা উপলব্ধি করেছে ডব্লুএসআইএস। তাই সবুজসাথী প্রকল্পকে তারা ‘হুইলস অব চেঞ্জেস’ বলে বর্ণনা করেছে।
২০১৯ সালে ডব্লুএসআইএস প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সেরা হয়েছিল বাংলার সবুজসাথী প্রকল্প। কিন্তু এবার বাংলার সাফল্যের মুকুটে সেই প্রকল্পই ‘বিশ্ব সেরার’ পালক যোগ করল।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা আবহে লকডাউন পর্বে পড়ুয়াদের মধ্যে সাইকেল বিলির প্রক্রিয়া অনেকটাই ধীর হয়ে যায়। সম্প্রতি বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকে দ্রুত সাইকেল বিলি করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার বাড়িতে তা পৌঁছে দিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কিছুদিন আগেই সবুজসাথী প্রকল্পের বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে রাজ্যে সাইকেল কারখানা তৈরির জন্য বিনিয়োগকারীদের কাছে আহ্বানও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সূচনা হয় ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের। এই প্রকল্পে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সি বেকার যুবক-যুবতীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্বল্প সময়ের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় নিখরচায়। যে-সব কাজের চাহিদা রয়েছে, একমাত্র সেগুলির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এই প্রকল্পে। মমতা ব্যানার্জির মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্পও বিশ্বের দরবারে সমাদৃত হয়েছে।
Comments are closed.