সিএএ বিরোধী আন্দোলন রুখতে এবার প্রয়োজনে সেনা নামানোর হুমকি দিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। রবিবার গিরিশ পার্কে সংগঠনের এক সভায় পরিষদের সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন বলেন, মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, সিএএ কার্যকর হলে গৃহযুদ্ধ হবে। তিনি এবং অন্য বিরোধী নেতারা মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছেন। আমি বলছি, মুষ্টিমেয় লোক দিয়ে গৃহযুদ্ধ হয় না। দেশের সেনাবাহিনীর এই সব বিক্ষোভ মোকাবিলা করতে বেশি সময় লাগবে না। তার পরে তো আমরা আছিই। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ওই নেতার দাবি, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ সিএএ-র পক্ষে। তার মধ্যে হিন্দু, মুসলিম উভয় সম্প্রদায়েরই মানুষ আছেন। মানুষের এও মনোভাবকে মর্যাদা দেওয়া উচিত তৃণমূলের। না হলে আগামী বিধানসভা ভোটে ফল ভুগতে হবে মমতা ব্যানার্জিকে।
এদিকে রবিবারই দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচারে নেমে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আবার হুমকি দিলেন, কথায় কাজ না হলে গুলি চলবে। তবে তাঁর এই গুলি চালানোর হুমকি রাজ্যের কাঁওয়ার যাত্রার প্রেক্ষিতে। শ্রাবণ মাসে কাঁওয়ার যাত্রার সময় স্থানীয় মানুষের সঙ্গে পুণ্যার্থীদের প্রায়ই ঝামেলা হয়। অখিলেশ যাদবের জমানায় এই যাত্রার উপর আনেক নিয়ম জারি করা হয়েছিল। যোগী ক্ষমতায় এসে সে সব নিয়ম তুলে দেন। তার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই, সবাই উৎসব করুক। কিন্তু তাই বলে শিবের উপাসকদের উপর কেউ হামলা চালাবে, তা বরদাস্ত করা হবে না। কথা না শুনলে বুলেট দিয়ে শোনাতে হবে। কিছুদিন আগেই আন্দোলনের নামে সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস রুখতে গুলি করে মারার নিদান দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শাহিন বাগে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে লাগাতার চলতে থাকা আন্দোলন নিয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, ঠান্ডায় এত লোক মারা যায়। কিন্তু দিল্লির ওই ঠান্ডায় রাতে শাহিন বাগে এত যে মহিলারা বসে আছে, তারা তো মরছে না। কেন মরছে না, আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে বিরোধীরা। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা সুনীলে এবং যোগীর মন্তব্যেরও সমালোচনাইয় মুখর হন বিরোধীরা। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, সেনাবাহিনী আবার কবে থেকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ক্যাডার হল? সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, বিজেপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতাদের মুখে গুলি করা, সেনাবাহিনী নামানো ছাড়া আর কোনও কথা নেই। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, দেশজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে চল এই রকম একটা গণআন্দোলন দেখে ওরা কতটা ভয় পেয়েছে। তাই গুলি করা, সেনা নামানোর হুমকি শোনা যাচ্ছে নেতাদের গলায়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, এই সব নেতা সম্পর্কে কথা বলতে রুচি হয় না আমার।
Comments are closed.